অভিনেত্রী তাসনুভা তিশা। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত একক নাটক ‘তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়’। পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়’ নাটকের নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। এ নাটকসহ অভিনয় নিয়ে আগামীর পরিকল্পনা, এখনকার ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ।
নাটকটি নিয়ে তাসনুভা তিশা বলেন, নাটকটি আমার অভিনয় ক্যারিয়ারের অন্য রকম একটি কাজ। শুধু যে এটি চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে, তা নয়। বরং দর্শক প্রত্যাশা পূরণে ঠিক যে ধরনের গল্প প্রয়োজন; তা বাছাই করা, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাজ থেকে তাদের সেরা কাজটি বের করা আনা থেকে শুরু করে সব কিছু পরিকল্পনামাফিক করেছেন। আমরা যারা নাটকে অভিনয় করেছি, আমি, প্রান্তর দস্তিদার, প্রিয়ন্তী উর্বী– সবাইকে চরিত্র আত্মস্থ করে নিতে সবরকম সহযোগিতা করেছেন। তাই আমরাও ভালো কিছু করে দেখানোর চেষ্টায় কার্পণ্য করিনি।
অভিনেতা আরশ খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে রেকর্ড সংখ্যক নাটকে অভিনয় করেছেন। কিন্তু এখন তাদের আর একসঙ্গে অভিনয়ে দেখা যাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে এই অভিনেত্রী বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকে আরশের সঙ্গে নতুন কোনো কাজ করা হয়ে ওঠেনি। এর মানে এই নয় আমাদের জুটি চিরতরে ভেঙে গেছে। আরশ বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছিল, যেগুলো শেষ করা জরুরি ছিল। অন্যদিকে আমিও বসে না থেকে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছি। একইভাবে আরশকে অন্যান্য অভিনেত্রীর বিপরীতে কাজ করতে দেখা গেছে। যে কারণে একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কিন্তু অনেকে চান, আমরা যেন এক নাগাড়ে কাজ করে যাই। দুজনের কাজের শিডিউল একসঙ্গে মিলে গেলেই আমরা আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব।
তাসনুভা নিশার কথায়, চরিত্রকে নিজের মতো করে কল্পনা করে নিই। এরপর তা নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলি। ৯৯ ভাগ চরিত্রের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে, চরিত্র পর্দায় তুলে ধরা নিয়ে আমার সঙ্গে পরিচালকের ভাবনা অনেকটাই মিলে গেছে। এ কথা সত্যি যে, মঞ্চে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই আমার। কারও কাছ থেকে অভিনয় শিখেও আসিনি। তাই যখন যা কিছু করেছি, পরিচালকদের নির্দেশ মেনে করেছি। তাদের প্রশ্রয় আর সহযোগিতাই সব ধরনের কাজে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।
ধারাবাহিকে অভিনয় নিয়ে অনেকের অনীহা দেখা যায়। তিনিও কী ধারাবাহিক নাটক থেকে দূরে থাকতে চান- এমন প্রশ্নের জবাবে তিশা বলেন, ধারাবাহিক নাটক মানেই একই গল্প আর চরিত্রের মধ্যে অনেক দিন নিজেকে আটকে রাখা। এজন্য অনেকে ধারাবাহিকে অভিনয় করতে চান না। ধারাবাহিকের কাজ শেষ হতে হতে একক নাটকে অনেক রকম গল্প ও চরিত্র কাজ করার সুযোগ হয়। আর সেই সুযোগ অনেকে মিস করতে চান না। কিন্তু ধারাবাহিকে কাজ করায় আমার আপত্তি নেই, কারণ অভিনয় আমার পেশা। এখন তো হাতে খুব বেশি কাজ নেই। তাই ভাবছি, নতুন যে ধারাবাহিক নিয়ে কথা চলছে, সেগুলোর কাজ শুরু করে দেব।
বর্তমানে বেছে বেছে কাজ করছেন তিশা, তাই হাতে কাজও কম। খানিকটা সময় নিয়ে ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চান তিনি। তাসনুভা তিশার কথায়, নিজের সিদ্ধান্ত অটল থাকার কারণেই হাতে কম কাজ। দেখা যাচ্ছে, ১০টি কাজের প্রস্তাব পাচ্ছি, যার আটটি গল্পই যাচ্ছেতাই। শেষমেশ তাই দুটি নাটকে অভিনয় করতে হচ্ছে। সেগুলোর কাজ শেষ হলে বাকি সময়টা কাজহীন। অভিনয় যেহেতু পেশা, তাই হাত কাজ না থাকাটা কষ্টের। তার পরও সবরকম কষ্ট মেনে নিয়ে ভালো কাজ করব। এই সিদ্ধান্তে আমি অনড়।