গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে কিশোর গ্যাং সদস্য তিহিম মাদবরের গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি পুলিশের নজরে আসার পর শ্রীপুর থানা পুলিশ তিহিমকে ধরতে অভিযান শুরু করেছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিহিম এবং তার বাবা-মা কেউই বাড়িতে নেই, তবে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল থেকে ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে ১৯ বছর বয়সী তিহিম মাদবরকে একটি ভবনের ছাদে পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এছাড়াও, তাকে প্যান্টের পকেট থেকে গুলি বের করে নাড়াচাড়া করতেও দেখা গেছে। তিহিম মাদবর শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধনুয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান জামানের ছেলে এবং এলাকায় কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় শিল্পকারখানার শ্রমিকসহ বাইরের লোকজন তার ভয়ে ভীত বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সংবাদকর্মী আব্দুর রউফ ও আরিফ মন্ডল ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডব ও প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আরিফ মন্ডল তার পোস্টে এক মেয়েকে তুলে নেওয়ার হুমকির কথাও উল্লেখ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কলিম উদ্দীন মাতবর জানান, তিহিম তার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে এবং কামাল নগর স্কুলে লেখাপড়া করত। দুই বছর আগে শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে সে স্কুল ছেড়ে দেয়। কলিম উদ্দীন মাতবর আরো জানান, তার বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে তিহিম তার এক সহযোগীর মাধ্যমে লোহা বিক্রি করে দেয়। এনিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে তিহিম তাকে পিস্তল এনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার এনিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ ডাকা হয়। সালিশের পরপরই তিহিম তার ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয় এবং শুক্রবার সকালে কলিম উদ্দিনের নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে মেসেঞ্জারে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেয়, যার ফলে মেয়েটি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গাজী ইসমাইল জানিয়েছেন, তিহিম মাতবর এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত এবং কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয়। তিনি দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ভিডিওটা গত ২ বা ৩ মাস আগের। সম্প্রতি তার চাচার সাথে বিরোধ হওয়ায় এখন ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে। তিনি জানান, গুলি ছোড়ার শব্দ ও ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে এটা আসল অস্ত্র। পুলিশ তিহিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের পর অস্ত্রটি আসল না নকল, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।