গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমি সবেমাত্র কথা বলা শুরু করতে যাচ্ছি, সেই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই হামলা চালালো। প্রথম দফায় যে হামলা হয়েছে, তাতে আমার আঙুল ফ্র্যাকচার হয়েছে। আমি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছি। এর পরে জাস্ট প্রতিবাদ জানানোর জন্য আমরা মশাল মিছিল করেছি।
পরে প্রেস ব্রিফিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী আমাদের কার্যালয়ের সামনে এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এমনকি আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের নিচে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে, এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, আমরা দাবি রাখছি, তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
আজকে খোদাবক্স তিনি কী করছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন কী না, প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন কী না, অন্য উপদেষ্টারা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে, কার্যালয়ের সামনে ব্রিফিং যখন চলছিল, তখন হামলার নির্দেশনা দিয়েছেন কী না, আমরা সেই প্রশ্ন রাখছি। আজকে জাপার প্রতি আপার প্রতি এই প্রশাসনের এই সরকারের কেন মায়া?
রাশেদ খান বলেন, ‘আপা (শেখ হাসিনা) যে পথে গেছে, জাপাকেও সেই পথেই যেতে হবে। আমরা আওয়ামী লীগ আমলে মার খেয়েছি, আমাদের রক্তাক্ত করা হয়েছে, নুরুল হক নুরের ওপরে ২২ বার হামলা হয়েছে, আজকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে নুরের ওপর হামলা হলো, আমরা এর বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সময়েই এই রকম ন্যাক্কারজনক হামলা হয়নি। সেনাবাহিনী বুট জুতা দিয়ে আওয়ামী লীগের সময়েও আমাদের পেটায়নি। নুরুল হককে পেটায়নি। আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশ সেনাবাহিনী কেউ কখনই সাহস করেনি। আজকে আমাদের কার্যালয়ের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ ঢুকেছে। আমাদের বুট জুতা দিয়ে পিটিয়েছে, পাড়িয়েছে এবং এবং লাঠি দিয়ে ব্যাপকভাবে আহত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের নাক ফেঁটে গেছে, চোখে আঘাত লেগেছে, তার বুকে আঘাত লেগেছে, মাথা ফেঁটে গেছে, তিনি এখন মুমূর্ষু অবস্থায়, বাঁচবেন কী মারা যাবেন আমি জানি না। তার এই মুহূর্তে খিচুনি ওঠা শুরু হয়েছে। যে কারণে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরাও এখন ঢাকা মেডিকেল যাচ্ছি।’
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর পর শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে নুরুল হক নুরসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় পরে রক্তাক্ত অবস্থায় নুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান নেতাকর্মীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত ৯টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন।