৮ জুলাই ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ৩:১৬ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধর্ষক ফজর আলীর মিটিং-মিছিলের ছবি ভাইরাল

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ৩:১৬ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার মিটিং মিছিলের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে এসব ছবি ভাইরাল হয়।

ভাইরাল ওই ছবিগুলোর কোনটিতে ফজর আলীকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন, কোনটিতে আবার খোকন চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফজর খাচ্ছেন এবং কোনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় একটি মিছিলের সামনের সারিতে থাকতে দেখা গেছে। তবে ধর্ষণের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত ফজর বিএনপির কর্মী বলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রচার করা হয়। ফজর আলী আসলে কোন দলের এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফজর আলী কোনো কাজকর্ম করতেন না। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া খোকনের সঙ্গে ঘোরাফেরা করতেন। খোকন চেয়ারম্যানের সঙ্গে থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজকের দায়িত্ব পালন করতেন ফজর। খোকন চেয়ারম্যানের বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজে সহযোগিতা করতেন তিনি। বিভিন্ন টেন্ডার কাজ করে যা আয় হতো তা দিয়ে চলতেন ফজর আলী।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভোল পাল্টে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মেশা শুরু করেন। রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক পদ পেতে চেষ্টা করছিলেন বলেও একাধিক বাসিন্দা নাম গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন।

রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফজর আলী একজন আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতা খোকন চেয়ারম্যানের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ৫ আগস্টের পর খোকন চেয়ারম্যানের সঙ্গে চলাফেরা কমিয়ে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফজর আলীকে আমি তেমন চিনি না। আমি একজন ইউপি চেয়ারম্যান, আমার সঙ্গে অনেকেই ছবি তুলতে আসে আমি তো কাউকে ওইভাবে মনে রাখি না।

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, বিএনপির সঙ্গে ফজর আলীর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগের এক চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেন। এখন অনেকে তাকে বিএনপি কর্মী হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ফজর আলীর বেশ কয়কটি ছবি দেখছি, কিন্তু বিএনপির নেতাদের সঙ্গে একটা ছবিও নেই তার। সুতরাং অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক ঘটনা তুলে ধরার অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ফজর আলী নামে (৩৮) এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়।

শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি দুই সন্তানের মা। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ভিডিও ভাইরাল করার দায়ে চারজনকে এবং ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লায় নেয় পুলিশ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x