৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১:৫৭ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

আজও শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১:৫৭ পিএম

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছেন। ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে। চার দিনের কলম-ধর্মঘটের পর শনিবার কর্মকর্তারা করদাতাদের পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেন। আজ ওই কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন।

রোববার (২৯ জুন) এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সবগুলো গেট বন্ধ রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সশস্ত্র অবস্থান দেখা গেছে। ফলে এনবিআরে কেউ প্রবেশ কিংবা বের হতে পারছে না। অবরুদ্ধ এনবিআরের প্রধান গেটের সামনেই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পালিত হচ্ছে শাটডাউন কর্মসূচি।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও ‘প্রতিহিংসামূলক বদলি’ বন্ধের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন। তবে, চলমান কর্মসূচি থেকে কেবল আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেন। সকাল থেকে সারাদেশের এনবিআর কর্মকর্তারা সেখানে জড়ো হতে থাকেন।

আন্দোলনকারীদের হাতে আজও ‘দফা এক, দাবি এক, চেয়ারম্যানের পদত্যাগ’, ‘আব্দুর রহমান খানকে রেখে কোনো আলোচনা নয়’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। ঢাকাসহ সারাদেশের এনবিআরের কর ও কাস্টমস কার্যালয়েও একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সব অফিসের কার্যক্রমে অচলাবস্থা ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আন্দোলনকারী একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, বিগত তিন দিন ধরে এখানে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এখানে জলকামান রাখা হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তায় অফিসে আসছেন, আর আমরা গেটের বাইরে রোদে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি। তিনি যদি দায়িত্ববান হতেন, শুরু থেকেই আমাদের গুরুত্ব দিয়ে আমাদের বক্তব্য সরকারের কাছে পৌঁছে দিতেন। সমস্যার মূলে আসলে তিনিই, কারণ তিনিই সমস্যা জিইয়ে রেখেছেন। গতকালও এনবিআর ভবন অবরুদ্ধ ছিল, আজও তাই। ফ্যাসিবাদী সরকারের মতো ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন তিনি। আমরা আমাদের লক্ষ্যপূরণ না করে ঘরে ফিরে যাব না।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করে। শুক্রবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহারের নির্দেশনা, কর্মকর্তাদের বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনা ও আগামী মঙ্গলবার তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সরকারের পক্ষ থেকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানিসহ বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান করে কাজে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ওই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। ফলে অচলাবস্থা থেকেই যায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামের দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।

তবে ২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয় বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। যার কারণে ২৬ মে কলম বিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। মাঝের সময় কোনো ধরনের আলোচনা কিংবা সমঝোতা না হওয়ায় গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলন করে দ্বিতীয় দফায় ২৩ জুন থেকে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x