মানুষ কোথায় জন্ম নেবে, সেটা তার হাতে থাকে না। কিন্তু কীভাবে জীবন কাটাবে, কতদূর যাবে—তা অনেকটাই তার নিজের অভ্যাস ও মানসিকতার ওপর নির্ভর করে। অনেকে জীবনভর সংগ্রাম করেও আর্থিক সচ্ছলতা পান না, আবার কেউ অনুপ্রেরণায় ও অভ্যাসে জীবন বদলে ফেলেন। অর্থনৈতিক ব্যর্থতার পেছনে বড় কারণ কয়েকটি বদভ্যাস, যা মানুষ নিজের অজান্তেই দিনের পর দিন বহন করে চলে।
বিশেষজ্ঞ ও সচেতন ব্যক্তিদের মতামতে, নিচের এই বদভ্যাসগুলোই একজন মানুষকে আজীবন দরিদ্র করে রাখতে পারে—
১. ‘করব’—এই মনোভাব পোষণ করা
যা কিছু আজ করা সম্ভব, তা কাল করার জন্য রেখে দেওয়া। সময়ের কাজ সময়ে না করা অভ্যাসটি ধীরে ধীরে অলসতা ও পিছিয়ে পড়ার কারণ হয়।
২. নিজের উন্নতির জন্য আন্তরিক চেষ্টা না করা
অনেকে অল্প বেতনের চাকরি করে বছরের পর বছর পার করে দেন, কিন্তু ভালো কিছু পাওয়ার জন্য বাস্তব উদ্যোগ নেন না।
৩. অন্যে কী ভাবছে, তাতে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া
নিজের সিদ্ধান্ত বা জীবনধারা অন্যের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভরশীল হলে, ব্যক্তি নিজস্ব লক্ষ্য থেকে সরে যায়।
৪. নিজের অবস্থার জন্য অন্যকে দায়ী করা
পরিবার, সরকার বা পরিবেশকে দোষ দিয়ে নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে বাস্তব উন্নতি সম্ভব হয় না।
৫. বড়লোকি দেখানোর প্রবণতা
অনেকে অর্থ সঞ্চয় বা বিনিয়োগ না করে বাহ্যিক আভিজাত্য দেখাতে ব্যস্ত থাকেন। এতে করে বাস্তব আর্থিক সচ্ছলতা অর্জিত হয় না।
৬. পারফেক্ট সময়-এর জন্য বসে থাকা
কেউ কেউ ভাবেন, ‘ঠিক সুযোগ বা পরিস্থিতি এলে কাজ শুরু করব’। এই অপেক্ষায় সময় নষ্ট হয়, কিন্তু সুযোগ আর আসে না।
৭. অভিযোগ করার অভ্যাস
সবসময় অসন্তোষ প্রকাশ, পরিস্থিতির নিন্দা করা—এসব নেতিবাচক অভ্যাস কাজের উৎসাহ নষ্ট করে দেয়।
৮. চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে চলা
যে কাজ কঠিন বা নতুন, তা থেকে দূরে থাকা—এমন অভ্যাস উন্নতির পথে বাধা তৈরি করে।
৯. প্রতিজ্ঞা করে না রাখা
সামর্থ্যের বাইরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং তা রক্ষা না করা ব্যক্তি জীবনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্থায়িত্ব দুটোই কমায়।
১০. ব্যর্থতায় হাল ছেড়ে দেওয়া
একবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে আর ফিরে না আসা অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় বাধা।
১১. খরচ বেশি, সঞ্চয় কম
আয়ের সঙ্গে খরচের সামঞ্জস্য না রাখা এবং সঞ্চয়ের গুরুত্ব না বোঝা দারিদ্র্য বাড়ায়।
১২. অলসতা ও সময় অপচয়
অতিরিক্ত বিনোদন, সোশ্যাল মিডিয়া বা ঘুমে সময় নষ্ট করে দিন শেষ করা—এটি কার্যত সময়ের অপচয়।
১৩. শেখার আগ্রহের অভাব
নতুন দক্ষতা না শিখলে প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
১৪. বাজে সঙ্গের প্রভাব
অলস, নেতিবাচক বা দায়িত্বহীন মানুষের সঙ্গে চললে নিজের মনোভাব ও অভ্যাসও তেমনি হয়ে যায়।
১৫. পরিকল্পনা ছাড়া জীবনযাপন
বিনা লক্ষ্য বা লক্ষ্যভ্রষ্ট জীবন দীর্ঘমেয়াদে কোনো অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এনে দিতে পারে না।
১৬. ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা
প্রয়োজন ছাড়াও বারবার ঋণ নেওয়া, বিশেষ করে ভোগের জন্য, দারিদ্র্যকে পাকাপোক্ত করে তোলে।