২ আগস্ট ২০২৫ শনিবার
প্রকাশ : ১ আগস্ট ২০২৫, ৪:৩৯ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের সুখবর দিলো মালয়েশিয়া

প্রকাশ : ১ আগস্ট ২০২৫, ৪:৩৯ পিএম

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে আটকে পড়া মালয়েশিয়ায় যেতে আগ্রহী কর্মীদের নতুন সুখবর দিয়েছে দেশটির সরকার। বিশেষ এক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেইসব বাংলাদেশি কর্মীদের পুনরায় নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে মালয়েশিয়া। শুক্রবার (১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, যারা ২০২৪ সালের ৩১ মে’র মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের মধ্য থেকে বোয়েসেল (বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড)-এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া সরকার নির্মাণ এবং পর্যটন খাতের জন্য কর্মীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই প্রক্রিয়ার আওতায় কর্মীদের নিয়োগের জন্য, সব সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা এবং স্টেকহোল্ডারদের কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। বিদেশি কর্মী কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির (এফডব্লিউসিএমএস) পোর্টালে তথ্য জমা দিয়ে নিয়োগকর্তাদের প্রথমে এফডব্লিউসিএমএসের অনলাইন পোর্টালে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাগজপত্র জমা: অনলাইন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর, জমা দেয়া নথিপত্রের একটি সম্পূর্ণ সেট (মূল এবং ফটোকপি উভয়ই) বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুরে জমা দিতে হবে। এই কাগজপত্রগুলো যাচাই-বাছাই এবং পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণের জন্য পাঠানো হবে।

নিয়োগকর্তাদের নিশ্চিত করতে হবে যে তারা পোর্টালে এবং হাইকমিশনে জমা দেয়া সমস্ত নথি সঠিকভাবে প্রস্তুত করেছেন। এই পদক্ষেপটি মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নির্মাণ ও পর্যটন খাতে কোটা সত্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র: মালয়েশিয়ায় নির্মাণ এবং পর্যটন খাতে কর্মী কোটা সত্যায়নের জন্য নিয়োগকর্তাদের কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দিতে হবে। নিচে সেসব নথিপত্রের একটি বিস্তারিত তালিকা দেয়া হলো-

কোম্পানির সাধারণ নথিপত্র

১. কোম্পানির অনুমোদনপত্র: কোম্পানির পক্ষ থেকে একজন অনুমোদিত ব্যক্তির চিঠি, যিনি কমপক্ষে ম্যানেজার পর্যায়ের কর্মকর্তা।

২. ব্যাংক স্লিপ: বাংলাদেশ হাইকমিশনে সত্যায়ন ফি জমা দেয়ার মূল ব্যাংক স্লিপ।

৩. কর্মীদের বেতন স্লিপ: ৪-৫ জন কর্মীর সাম্প্রতিক বেতন স্লিপের নমুনা।

৪. কোম্পানির প্রোফাইল: কোম্পানির পটভূমি সম্পর্কিত তথ্য। (বর্তমানে কর্মরত দেশি ও বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা, ২-৩ জন বাংলাদেশি কর্মীর মোবাইল নম্বর (প্রয়োজনে)। গত ৩ মাসের কোম্পানির ব্যাংক স্টেটমেন্ট, যেখানে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকতে হবে। ১০০ জন কর্মীর জন্য সর্বনিম্ন ২ লাখ রিঙ্গিত ব্যালেন্স থাকা আবশ্যক।

৫. কর্মীর ক্ষতিপূরণ প্রকল্পের নথি (সকসো): বর্তমানে কর্মরত কর্মীদের কর্মীদের বীমা নথিপত্রের নমুনা।

৬. হাসপাতাল ও সার্জিক্যাল স্কিমের নথি: বর্তমানে কর্মরত কর্মীদের নথিপত্রের নমুনা।

৭. জেটিকে সার্টিফিকেট: বর্তমানে কর্মরত কর্মীদের আবাসনের বিষয়ে জেটিকে থেকে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট।

৮. চুক্তিপত্র/অ্যাগ্রিমেন্ট: নির্মাণ খাতের জন্য কাজের চুক্তিপত্র বা অ্যাওয়ার্ড লেটার।

৯. প্রতিশ্রুতিপত্র/গ্যারান্টি লেটার: কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি প্রতিশ্রুতি বা গ্যারান্টি লেটার।

১০. চাহিদাপত্র: কোম্পানির ডিরেক্টর স্বাক্ষরিত চাহিদা পত্র।

১১. পাওয়ার অব অ্যাটর্নি: একজন প্রতিনিধিকে ক্ষমতা অর্পণের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি।

১২. নিয়োগ চুক্তি: কর্মীদের নিয়োগের চুক্তিপত্র।

১৩. বোয়েসেল এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে চুক্তি: বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্র।

১৪. কোটা অনুমোদনের চিঠি: মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্ত কোটা অনুমোদনের চিঠি।

১৫. নথিপত্রের সেট: উল্লিখিত সকল নথিপত্র দুটি সেটে জমা দিতে হবে-একটি মূলকপি এবং অন্যটি ফটোকপি।

এদিকে, মালয়েশিয়া সরকারের এই উদ্যোগ হাজার হাজার বাংলাদেশি পরিবারে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। কর্মী এবং নিয়োগকর্তা উভয় পক্ষই আশা করছে, এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে, যাতে আটকে পড়া কর্মীরা তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য মালয়েশিয়ায় পৌঁছাতে পারেন। এটি কেবল কর্মীদের জন্যই নয়, বরং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের চাহিদাও পূরণে সহায়ক হবে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x