৭ ডিসেম্বর ২০২৫ রবিবার
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:৫৪ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

আমি শিবভক্ত, গালিগালাজের বিষ গিলে নেব: মোদি

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:৫৪ পিএম

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রোববার আসামে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, জনগণই তাঁর আসল প্রভু ও ‘রিমোট কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রক’ এবং তাঁদের কাছেই তিনি নিজের কষ্ট প্রকাশ করেন। সম্প্রতি তাঁকে ও তাঁর প্রয়াত মা হীরাবেন মোদিকে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় বিতর্কের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ‘শিবভক্ত’ এবং গালিগালাজের ‘বিষ’ তিনি ‘গিলে নেবেন।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। আসামের দারঙে এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি সেখানে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

মোদি বলেছেন, ‘আমি জানি, পুরো কংগ্রেস শিবির আমার দিকে আঙুল তুলবে আর বলবে, মোদি আবার কাঁদছে। জনগণই আমার ঈশ্বর। আমি যদি তাঁদের কাছে আমার ব্যথা না বলি, তাহলে কোথায় বলব? তাঁরাই আমার প্রভু, আমার দেবতা, আমার নিয়ন্ত্রক। আমার আর কোনো নিয়ন্ত্রক নেই।’

নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বিহারে নির্বাচনী প্রচারের সময় আরজেডি–কংগ্রেস মঞ্চ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কটূক্তির প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। যদিও কংগ্রেস দাবি করেছে, ওই সময়ে তাদের কোনো নেতা মঞ্চে ছিলেন না। এর কিছুদিন পর কংগ্রেস মোদির মাকে নিয়ে এআই-তৈরি একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।

‘রিমোট কন্ট্রোল’ প্রসঙ্গটি তাৎপর্যপূর্ণ। অতীতে মোদি অভিযোগ করেছিলেন, তৎকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীই ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের রিমোট কন্ট্রোল। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও গান্ধী পরিবারের রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত। কংগ্রেস এসব অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে।

মোদি জানান, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তাঁকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের একটি মন্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ভারত সরকার যখন আসামের গর্ব, কিংবদন্তি শিল্পী ভূপেন হাজারিকার হাতে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেয়, তখন খাড়গে বলেছিলেন, মোদি নাকি ‘গায়ক-নর্তকদের’ পুরস্কার দিচ্ছেন।

খাড়গে তখন কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন না, তবে ২০১৯ সালে তাঁর ওই মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছিল। পরে অবশ্য তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ‘ড. হাজারিকা ছিলেন আমাদের দেশের অন্যতম সেরা শিল্পী। সংগীত, কবিতা, সাহিত্য ও সিনেমা—সব ক্ষেত্রেই তাঁর অসামান্য অবদান ছিল। তাঁর কারণে আসামের সংস্কৃতি ও শিল্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়।’

মোদি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকেও টেনে আনেন তাঁর ভাষণে। তিনি বলেন, ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধে পরাজয়ের পর নেহরু স্বীকার করেছিলেন, উত্তর–পূর্ব ভারতের মানুষের ক্ষত সারেনি। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কংগ্রেস এখন সেই ক্ষতে লবণ ছিটাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘দশকের পর দশক কংগ্রেস আসাম শাসন করেছে। অথচ ৬০-৬৫ বছরে ব্রহ্মপুত্রের ওপরে মাত্র তিনটি সেতু করেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর মাত্র এক দশকে ছয়টি নতুন সেতু বানিয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই আপনারা আমাদের পরিশ্রমের মূল্যায়ন করেছেন এবং আশীর্বাদ দিয়েছেন।’

অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে মোদি বলেন, কংগ্রেসের আমলে সন্ত্রাসী হামলা হলে দলটি চুপ করে থাকত। তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের বাহিনী পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে সন্ত্রাসকে উচ্ছেদ করছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ায়। পাকিস্তানের মিথ্যাই কংগ্রেসের এজেন্ডা হয়ে যায়। তাই কংগ্রেস থেকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে।’

আসামে অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও মোদি কংগ্রেসকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ভোটব্যাংক। দেশের প্রতি তাদের কোনো চিন্তা নেই। এখন কংগ্রেস পরিণত হয়েছে দেশবিরোধী আর অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষাকর্তায়। কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন অনুপ্রবেশ বাড়িয়েছিল। আর এখন তারা চায় অনুপ্রবেশকারীরা দেশে স্থায়ী হোক এবং ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করুক।’

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x