২৪ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল কেন ঠেকাতে পারছে না ইসরাইল?

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

ইরানের দাবি ইসরাইলের গর্ভের প্রতীক আয়রন ডোমকে নাকানিচুবানি খাইয়ে সফলভাবে দেশটিতে আঘাত হানছে একের পর এক ইরানি মিসাইল। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দাবি করা আইরন ডোমকে ফাঁকি দিয়েই তাণ্ডব চালানোর দাবি তেহরানের। ইরান জানায়, তারা ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র এবং মোসাদের পরিকল্পনা কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। আর সেখানেই ইসরাইলের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো কাজেই আসেনি।

এর আগে ইসরাইলে এ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে আয়রন ডোম বেশিরভাগ হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে: তাহলে ইরানের হামলা মোকাবিলা করতে পারছে না কেন ইসরাইল? আর কীভাবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এই প্রতিরক্ষা ভেদ করল? ইসরাইলের দাবি তাদের আয়রন ডোম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সফলতা অর্জন করেছে।

২০১১ সাল থেকে এটি প্রতিটি সংঘাতে রকেট প্রতিহত করেছে চমৎকারভাবে। কিন্তু এবার ইরান ছুড়েছে চার শতাধিক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল। সঙ্গে শত শত ড্রোন। আর যে কারণে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেন ক্লান্ত। সর্বোচ্চ ৮০-৮৫ শতাংশ সফলতা পেলেও অনেক মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের তেল আবিবের মিলিটারি হেডকোয়ার্টার আর একটি মোসাদ অপারেশন প্ল্যানিং সেন্টার সরাসরি আঘাত করেছে। কিছু মিসাইল পড়েছে আবাসিক এলাকায়।

আয়রন ডোম কী?
আয়রন ডোম ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূলভিত্তি হলেও এটি পুরো ব্যবস্থার সবচেয়ে নিচের স্তরের একটি অংশ। এটি একটি বহুস্তরবিশিষ্ট সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ। আয়রন ডোম আকাশ থেকে আগত কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে, তার গতিপথ নির্ধারণ করে এবং সেটিকে মাঝপথেই ধ্বংস করে দেয়।

আয়রন ডোম কীভাবে কাজ করে?
ইসরাইলের দাবি আয়রন ডোমের সফলতা প্রায় ৯০ শতাংশ। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের সময় রকেট হামলার মোকাবিলা করতে এটি তৈরি করা হয় এবং ২০১১ সালে এটি কার্যকর হয়। এই ব্যবস্থা মূলত নিচু পাল্লার রকেট থামাতে ব্যবহৃত হয়, যা বড় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শনাক্ত করতে সক্ষম নয়।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে আর কী কী ব্যবস্থা রয়েছে?
আয়রন ডোম ছাড়াও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় অ্যারো-টু এবং অ্যারো-থ্রি ইন্টারসেপ্টর। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে আকাশেই ধ্বংস করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। অনেক সময় এটি মহাকাশের সীমানার মধ্যেও কাজ করে বলে দাবি ইসরাইলের। এ ছাড়াও আছে ডেভিড স্লিং, যেগুলো মাঝারি ও দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারে। পাশাপাশি রয়েছে টার্মিনাল হাই অ্যালটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স ব্যবস্থা।

কীভাবে ড্রোন প্রতিহত করে ইসরাইল?
ড্রোন প্রতিরোধে এয়ার টু এয়ার মিসাইল ব্যবহার করে ইসরাইল। যেখানে যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার ড্রোন ধ্বংস করা হয়।

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে?
আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তিনটি প্রধান উপাদান: রাডার সিস্টেম, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার ও ইন্টারসেপ্টর। যেটির সঙ্গে মিসাইলসহ লঞ্চার রয়েছে। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক মারিনা মিরন বলেন, রাডার শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে কন্ট্রোল সেন্টারে তথ্য পাঠায়। প্রয়োজন হলে দুটি ইন্টারসেপ্টর পাঠানো হয়। একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে। তবে এসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ইন্টারসেপ্টরের সংখ্যা সীমিত। ঠিক কতটি ইন্টারসেপ্টর রয়েছে তা গোপন রাখা হয়।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x