সারাবেলার খবর ডেস্ক
কুরবানির ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের ১২ দিনে সারাদেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন এক হাজার ৫৭ জন। এই সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৮ আহত হয়েছেন। ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
ঈদের আগে-পরে গত ৩ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ১২ দিনের ঈদযাত্রায় দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৩৯১টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪৩ জন। শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩১২ জন।
আজ বুধবার (১৮ জুন) বেসরকারি তদারকি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেল নিয়ে। ১২১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১০৭ জন। যা মোট সড়ক নিহতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
সড়ক দুর্ঘটনার স্থানভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১১৬টি ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ জন। আর সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে, ১৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ নিহত হননি। এদিকে, রাজধানী ঢাকায় ঈদযাত্রার সময়ে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হন।
যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্রে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১০৭ জন (৩৪.২৯ শতাংশ), বাস যাত্রী ৩৩ জন (১০.৫৭ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ আরোহী ১৮ জন (৫.৭৬ শতাংশ), প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ১১ জন (৩.৫২ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৭৩ জন (২৩.৩৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-বিভাটেক) ২০ জন (৬.৪১ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল আরোহী ছয়জন (১.৯২ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩৬টি (৩৯.১৯ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১২১টি (৩৪.৮৭ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৩৪টি (৯.৭৯ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি (১৬.১৩ শতাংশ) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ৮১টি (২৩.৩৪ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬৩টি (৪৬.৯৭ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৪৬টি (১৩.২৫ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫১টি (১৪.৬৯ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৬টি (১.৭২ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৮৯টি। এর মধ্যে বাস ১১৪টি, ট্রাক ৬৬টি, কাভার্ড ভ্যান ১১টি, পিকআপ ১২টি, ট্রাক্টর ৪টি, ট্রলি ৬টি, ডাম্প ট্রাক ৭টি, মাইক্রোবাস ১৭টি, প্রাইভেট কার ২৯টি, অ্যাম্বুলেন্স ৩টি, মোটরসাইকেল ১২৮টি, থ্রি-হুইলার ২৬টি (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪১টি (নসিমন-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-বিভাটেক), বাইসাইকেল-রিকশা ১৩টি এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১২টি।