জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ঋণের পরিবর্তে অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের দাবি জানিয়ে সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমী সাইকেল র্যালি।
আজ শনিবার (২৮ জুন) সকাল ৯টায় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া এই র্যালি ‘গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন’ উপলক্ষে আয়োজিত হয়। “জীবাশ্ম জ্বালানিকে না বল”, “জলবায়ু অর্থায়ন হোক মানুষের জন্য, মুনাফার জন্য নয়”, “ঋণ নয়, চাই অনুদান”— এমন সব স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে র্যালিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এই কর্মসূচির আয়োজন করে ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার এবং সিলেট সাইকেল কমিউনিটি।
আন্তর্জাতিক জলবায়ু ন্যায়বিচার দাবির অংশ হিসেবে কানাডায় জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলন, জার্মানিতে ইউএনএফসিসিসি ইন্টারসেশনাল ও স্পেনে জাতিসংঘ উন্নয়ন সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে বিশ্বের নানা প্রান্তে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আয়োজকরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। অথচ এই বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে মূলত ধনী দেশগুলো। তাই তাদের উচিত, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অনুদানভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করা এবং ঋণের বোঝা থেকে রেহাই দেওয়া।
মূল বক্তৃতায় সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম বলেন, আইএমএফের ঋণের শর্তে সরকার জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে, যা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। অথচ সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা বাড়ছে, আর গত ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাচার হয়েছে, যা বৈদেশিক ঋণের চেয়েও বেশি। এই পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
ধরা সিলেটের আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা শাহজাহান চৌধুরী বাহারের সভাপতিত্বে র্যালির উদ্বোধন করেন প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইউএই, সুইজারল্যান্ড ও বেলজিয়াম—এই ধনী রাষ্ট্রগুলোর উচিত বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ গ্রহণ বন্ধ করা এবং সেই টাকা ফেরত পাঠানো।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা ধরা (সিলেট) শাখার অন্যতম সংগঠ ও প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান চৌধুরী (ওয়েস) বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের উচিত দেশভিত্তিক অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য ঋণ নয়, অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন নিশ্চিত করা।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী, পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুদীপ্ত অর্জুন, সংগঠক অরূপ শ্যাম বাপ্পী, সোহাগ তাজুল আমিন এবং সিলেট সাইকেল কমিউনিটির এম এন এ জিয়া।