হাসনাত আবদুল্লাহ। নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক। সম্মুখসারির জুলাইযোদ্ধা। যে কজন অকুতোভয় গাজীর ওপর জুলাই আন্দোলন দাঁড়িয়ে আছে, তিনি তাদের অন্যতম। তিনি বাকপটু, কথায় রাখঢাক কম, কাউকে কিছু বলতে ছাড়েন না।
কিছুক্ষণ আগে (০৬ জুলাই, রাত পৌনে ১২টা) তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরা এবং তাদের পরিচালিত মিডিয়াগুলোর ওপর তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হাসনাত লেখেন, হাসিনার শাসনামলে রাষ্ট্র যখন হয়ে উঠেছিল জনতার শত্রু, তখন বসুন্ধরা গ্রুপের কিছু মিডিয়া শুধু চুপ ছিল না, তারা সক্রিয়ভাবে হাসিনার তাবেদারি করেছে, ফ্যাসিবাদকে সার্ভিস দিয়েছে। তারা মিথ্যা প্রচার করেছে, প্রতিবাদী ছাত্রদের নামে কুৎসা রটিয়েছে। তারা ভিডিও এডিট করে বাস্তবতা পাল্টে দিয়েছে। তারা এমন এক ভয়ংকর প্রোপাগান্ডা মেশিনকে জ্বালিয়ে রেখেছে, যে মেশিন ছাত্রদের গুলি করেছে, ভিন্নমতকে নিষ্ঠুরভাবে চুপ করিয়েছে।

তিনি লেখেন, আজ সেই স্বৈরাচার পতনের বহুদিন পরও তারা থামেনি। একই কায়দায় আবারো কলম ধরেছে, ক্যামেরা চালু করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির বিরুদ্ধে, নাগরিক পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে যে কুৎসা রটানো তারা শুরু করেছে, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা এক চেনা স্ট্র্যাটেজি। উদ্দেশ্য স্পষ্ট: যারা পরিবর্তন আনতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়িয়ে করপোরেট স্বার্থ রক্ষা করা।
‘এটা সাংবাদিকতা নয়। এটা ডার্ক অপারেশন। মিথ্যা আর বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণকে ঠকানোর অপারেশন।’ মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতা আরো লেখেন, আমরা মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। সেই স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব, সত্যের প্রতি দায়, জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা। যখন বড় করপোরেট মিডিয়া ভুল তথ্য ছড়িয়ে জনমতকে বিষিয়ে তোলে, ওপিনিয়ন ম্যানুফ্যাকচার করার চেষ্টা করে, তখন ক্ষতি শুধু একটি দলের নয়। ক্ষতি গোটা গণতন্ত্রের।
তিনি লেখেন, আমরা গণ-অভ্যুত্থান করেছি শুধু শেখ হাসিনাকে নামাতে নয়। আমাদের এই অভ্যুত্থান ছিল সমস্ত স্বৈরতন্ত্র, সমস্ত ক্ষমতার অপব্যবহার, সমস্ত মিথ্যার কারখানার বিরুদ্ধে। আমাদের অভ্যুত্থান ছিল সকল ধরনের করপোরেট মাফিয়া আর ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও।
পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, সুতরাং, স্পষ্ট করে বলে দিই: আমরা ডকুমেন্ট করছি। প্রতিটি মিথ্যা, প্রতিটি অপপ্রচার, প্রতিটি সাংবাদিকতার নামে অন্যায় আমরা ডকুমেন্ট করছি। যদি এই মিডিয়া হাউজগুলো সংবাদপত্র না হয়ে ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে থাকে, তাহলে তাদের জবাবদিহির মুখোমুখি হতেই হবে। আপনারা জনগণের ঊর্ধ্বে নন। আর সত্যের ঊর্ধ্বে তো ননই। জীবন থাকতে বাংলার মাটিতে ফ্যাসিবাদের কোনো ধরনের পুনর্বাসনই আমরা হতে দেব না।