১ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ৬:৩৮ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

এবার গোপালগঞ্জের সব থানা ও গ্রামে যাবেন নাহিদরা

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ৬:৩৮ পিএম

আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করব বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি। পোস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করব। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাব।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের ওপরে। যে রকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরও ৫ আগস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা বহুবার বলছি আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।

নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে নাহিদ বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার নেতাকর্মীরা গতকাল গোপালগঞ্জে ছিল। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয় নাই। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, এর পরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি। চারজনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডজ্ঞানকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিত তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না।

এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা কমিট করেছিলাম আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে, মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দিবো না।

গোপালগঞ্জ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাব। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশ পন্থীদের হবে।

তিনি বলেন, শহীদ বাবু মোল্লার গোপালগঞ্জ, শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে আমরা পুনরুদ্ধার করব। মকসুদপুরে কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। এ মাটি মুজিববাদীদের হতে দিবো না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীর হবে না ইনশাআল্লাহ। যারা গতকালের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, রাস্তায় নেমেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x