বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনে একের পর এক প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল পর্যন্ত পরশুরামে বন্যার পানি কমে আসলেও ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর উপজেলায় বন্যার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফুলগাজী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার সাথে পরশুরামের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার বিকাল থেকেই চিথলিয়া ইউনিয়নে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এসব এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে ফুলগাজী হয়ে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরের দিকে চলে যাচ্ছে। এত করে পরশুরামে বন্যায় বাড়ি ঘর ও রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। ধনীকুন্ডা এলাকায় বন্যায় ভেসে আসা বসতবাড়ি টিনের শেড পড়ে আছে। পানি গড়িয়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা এবং জমিতে জমে থাকা বালুর স্তর স্থানীয়দের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
এদিকে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন নতুন প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফুলগাজী ও পরশুরাম থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ইতিমধ্যে ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ, মোটবী, ফাজিলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ফেনী ছাগলনাইয়া সড়কের ওপর দিয়ে পানি গড়িয়ে যাওয়ায় রাস্তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

ফেনী আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৫০.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফেনীতে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার একাংশ ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষকে প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে কাজ করছে।
এর আগে, সোমবার থেকে ভারি বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০টি স্থান ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। ইতিমধ্যে প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। দুর্গত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফেনী থেকে ফুলগাজী-পরশুরাম ও ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে প্রশাসন, রাজনৈতিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় নিয়োজিত রয়েছে।