জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার প্রথম বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা ই্যসুতে একসঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রস্তাব করেছে দল। মঙ্গলবার (০৩ জুন) সকালে রাজধানীর ফরেন সাভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে দ্বিতীয় ধাপের প্রথম বৈঠকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্ব এ বৈঠক চলে।
পরে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা ই্যসুতে একসঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রস্তাব করেছে বিএনপি। আস্থা, অর্থ ও সংবিধান সংশোধন ছাড়া অন্য সকল বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীন থাকবেন, এ তিন বিষয়ে একমত বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ তিন মাসের প্রস্তাব করা হবে। সাংসদীয় কমিটির কিছু কিছু স্থানে সভাপতি পদে বিরোধীদল থেকে হতে পারে। তবে সব জায়গায় বিরোধী দল থেকে নিলে সরকারের অসুবিধা হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। প্রথমদিনের আলোচনা এবং দ্বিতীয় দিনের ফলাফল জানানোর কথা বলা হয়েছে। এক টানা আলোচনা করলে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শেষ হতে পারে। সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক সাথে করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে সংস্কার কাজ নির্বাচিত সরকার বাতিল করতে না পারে। জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ তাহের বলেন, অর্থবিল, সংশোধন ও আস্থাভোট ৭০ অনুচ্ছেদে একমত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পক্ষে দল।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয় বেশিরভাগ একমত। সংবিধান ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে হওয়ার বিপক্ষমত এনসিপির। সরকারের স্থিতিশীলতা থাকতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাবে একমত নয় তারা। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামকরণ প্রস্তাব। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত। নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ তিন মাস অথবা চার মাস হতে পারে।
অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের আলোচনায় প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা হলেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আশরাফ আলী আকনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
বিষয়ভিত্তিক আজকের আলোচনায় চারটি মূল বিষয় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ তথা দলের বিপক্ষে ভোটদান, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্ন-কক্ষের নারীদের ১০০ আসন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করেন দলগুলোর নেতারা।