চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ব্যাপকভাবে কমেছে বিদেশি অনুদান ও ঋণের অর্থছাড়। এ সময়ে অনুদান ও ঋণ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি কমেছে ৩৪ থেকে ৬০ শতাংশ। এমন তথ্য মিলেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে। তবে প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ বেড়েছে ঋণ পরিশোধ। প্রকল্প ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি কমায় সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
চলতি অর্থবছর দেশের রফতানি ও প্রবাসী আয় সুখবর দিলেও প্রকল্প ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি কমিয়েছে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীরা। এমন চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরের তুলনায় গেল মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ৬০ শতাংশ কমেছে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি। সবচেয়ে বেশি ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছে আমেরিকা, জাপান ও বিশ্বব্যাংকের আইডিএ কর্মসূচি থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি এসেছে এশীয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকে।
ভাটা পড়েছে অনুদানের প্রতিশ্রুতিতেও। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে যেখানে প্রতিশ্রুতি মিলেছিল ৫০ কোটি ২১ লাখ ডলারের, সেখানে এবার এসেছে ৩৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি। কমেছে ৩৪ শতাংশ।
প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ও কমেছে চলতি অর্থবছরে। ঋণ-অনুদান সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৪৮০ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার অর্থছাড় পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১৪ শতাংশ কম।
প্রকল্প ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি কমায় সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। দিচ্ছেন আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে দেখার পরামর্শ। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, আইএমএফের পক্ষ থেকে এখনও ঋণ প্রাপ্তিতে সবুজ সংকেত মেলেনি। অন্যান্য সাহায্যকারী সংস্থা থেকেও তেমন ইতিবাচক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। যা সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ হলে বিদেশি সাহায্য তেমন মিলবে না। এটিক আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে ধরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় কমালেও গত জুলাই থেকে মার্চ–৯ মাসে ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ।