বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। দেশত্যাগ করে তিনি সেখান থেকে ইমেইল পাঠিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তার এই পদত্যাগে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই বলছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে বাঁচতেই তিনি কৌশলে দেশত্যাগ করেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পদ্মা অয়েলের এমডি মো. আবদুস সোবহানের পদত্যাগ প্রচলিত নিয়মে হয়নি। অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে যাওয়ার অজুহাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখান থেকে গত ১৪ মে বিপিসির চেয়ারম্যানের কাছে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিপিসির সচিব (উপসচিব) শাহিনা সুলতানা। প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার স্ত্রী বাস করেন এবং স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি ছুটি নেন। তবে ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি দেশে ফেরেননি।
গত ১৩ মে পদ্মা অয়েল কোম্পানির বোর্ড সভায় তার অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব জাফর উল্লা খান সভায় তিনি কোথায় কীভাবে আছেন প্রশ্ন তোলেন। জবাবে কোম্পানির সচিব আলী আবছার জানান, তিনি ছুটিতে দেশের বাইরে আছেন। বিষয়টি নিয়ে বোর্ডে ব্যাপক আলোচনা হয়। পরদিন ১৪ মে ইমেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান সোবহান। বিষয়টি অনেকের চোখে নজিরবিহীন বলে বিবেচিত হচ্ছে।
জানা যায়, প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে এলপি গ্যাস এবং বিটুমিন বিপণনে দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত চলছে। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অনেক কর্মকর্তার ধারণা, এই অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতেই তিনি নীরবে পালিয়ে গেছেন।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। তার আগে তিনি এলপি গ্যাস লিমিটেডের (এলপিজিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পদ্মা অয়েল সূত্রে জানা গেছে, আবদুস সোবহানের যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড রয়েছে। তার স্ত্রী ও সন্তানরা সেখানে বসবাস করেন। এর আগে গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ভিসা জটিলতায় পড়েছিলেন তিনি। এবার স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।