ফেনীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফরিদা ইয়াসমিন (৪০) নামে এক সিজারিয়ান রোগীকে পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেয়া হয়েছে। অপারেশনের ৭ মাস পর ফেনীর আরেকটি প্রাইভেট হাসপাতালে বুধবার রাতে অপারেশন করে সে গজ বের করা হয়। এ অভিযোগে ২৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফেনী শহরের আল-কেমী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডাক্তারের বিরুদ্ধে ফেনীর সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর গ্রামের প্রবাসী মহি উদ্দিন উদ্দিনের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন গেল ৩ ফেব্রুয়ারি আল-কেমী হাসপাতালে সিজার অপারেশন করে ডা. তাসলিমা আক্তার। এ সময় রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই দিয়ে রোগীকে বেড়ে পাঠিয়ে দেন। চারদিন পর রোগীকে রিলিজে বাড়ীতে পাঠালে রোগীর পেটে ব্যাথা দেখা দেয়। এরপর ডা. তাসলিমা আক্তারের কাছে গেলে তিনি ফরিদা ইয়াসমিনকে ব্যথার ঔষধ দিয়ে ফের বাড়ী পাঠিয়ে দেন।
সাত মাসে স্বজনরা রোগীকে নিয়ে আরো কয়েকজন চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্বরনাপর্ণ হয়। এতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার পেটে অদৃশ্য বস্তু রয়েছে ও তাকে ফের অপারেশন করাতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। বুধবার রাতে ফেনী শহরের আল বারাকা হাসপাতালে সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডা. আজিজ উল্লাহ ভুক্তভোগী ফরিদা ইয়াসমিনকে অপারেশন করে পেট থেকে প্রায় ১ কেজি ওজনের ১ ফুট একটি গজ বের করে।
রোগীর স্বামী মহি উদ্দিন জানান, রোগীর ব্যাথা নিয়ে গত ৭ মাসে তার প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এতে তার পরিবার ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। রোগীর ভাই মো. শাহ ফয়সাল জানান, তার বোনের এ সমস্যা নিয়ে তাদের দুই পরিবারের সদস্যরা গত ৭ মাস শারীরিক মানসিক আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এনিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা, পরীক্ষা নিরীক্ষা, ঔষধ বাবত ৫ লাখ টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর ভাই মো. শাহ ফয়সাল বাদী হয়ে ফেনীর সিভিল সার্জন ও ফেনী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে জানতে ডা. তাসলিমা আক্তারকে মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।