আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের একটির উপদেষ্টা তিনি। সাথে মাঝারি মাপের আরো একটি মন্ত্রণালয়ও দেখভাল করেন। জুলাই-যোদ্ধা, সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। শেষ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর উপদেষ্টা হিসেবে আসীন হন।
সম্প্রতি এক অলিখিত যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। ‘শত্রু’ হিসেবে পেয়েছেন রাজপথের আরেক বীরকে। অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ মেয়র, সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, রাজনীতিবিদ-মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার সন্তান ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তিনি। ইশরাক নিজেও একজন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ এবং আওয়ামীবিরোধিতায় রাজপথে থাকা এক অসমসাহসী যোদ্ধা।
আদালত চত্বর থেকে সেই দ্বন্দ্ব এখন নগরভবনের সামনে এসে ঠেকেছে। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে, সোশাল মিডিয়ায় ইশরাক হোসেন ক্রমাগত দুষে চলেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও ইশরাক হোসেনের নগরপিতা হওয়ার ক্ষেত্রে ‘বাধা’ শুধুই কী আসিফ মাহমুদ?
এবিষয়ে এবার মুখ খুললেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে প্রথমে ছয়টি প্রশ্ন করেন। এর পর বলেন নানা কথা।

আসিফ মাহমুদ প্রশ্ন করেন, অকারণে আমার ছবিতে জুতা মারার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? গুজবকে কেন্দ্র করে আমার পিতাকে ‘চালচোর’ বলে স্লোগান দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? শুরুতেই সরকারপক্ষ থেকে সমাধান চেষ্টা যারা দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করে ভোগান্তির জন্য দায়ী তারা ক্ষমা চেয়েছে? নগরভবন বন্ধ করে ১ কোটির বেশি নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? নগরভবন দখলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং আহত হওয়ার ঘটনায় কেউ ক্ষমা চেয়েছে? ইশরাক হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের জন্য আমাকে বারবার ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ, আমার পরিবারকে আক্রমণ, জবাই করার স্লোগান দেওয়াসহ অব্যাহত মানহানির জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে?
এর পর উপদেষ্টা লেখেন, কিন্তু আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে কারণ আমি বলেছি কয়েকজন নেতার প্ররোচনায় এই আন্দোলন হয়েছে। আমি সত্যি বলেছি, এবং সত্যি যে বলেছি এটা তিনিও জানেন। তাকে যে ট্র্যাপে ফেলা হয়েছে, ফর আ বেটার নেগোসিয়েশন ব্যবহার করা হয়েছে তা তিনি ভালো করেই জানেন এবং আমার পরিচিত একাধিক ব্যক্তির কাছে স্বীকারও করেছেন।
‘এত নোংরামি করার পরও গত দেড়মাসে একবারের জন্যও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি’ উল্লেখ করে তিনি আরো লেখেন, একবারও ব্যক্তি আক্রমণ করা কিংবা ছোট করে কথা বলিনি। আমার লড়াই, রাজপথ, রাজনৈতিক পথচলা কিংবা পরিবার কেউই আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি। আমি ধৈর্য ধরেছি, জবাব দেইনি বলে যে এসব অন্যায় জবাবহীন থেকে যাবে এমনটা না। ইতিহাস সবাইকেই যার যার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়।