১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ৮:১০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করেছে জাতি

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ৮:১০ পিএম

👁 23 views

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছে জাতি। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শুক্রবার সকালে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাতে অংশ নেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলের অঙ্গসংগঠনের নেতারা একে একে মাজার প্রাঙ্গণে এসে শহীদ জিয়ার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান। পুরো আয়োজন জুড়ে দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

উল্লেখ্য, জাতির ইতিহাসে এক বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী অধ্যায়ের নাম জিয়াউর রহমান। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশব ও কৈশোর পেরিয়ে শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি, কাকুল-এ অফিসার ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দুই বছর পর, ১৯৫৫ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে জিয়াউর রহমানের নাম এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৭১ সালে যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র জনতার ওপর নিপীড়ন চালায়, সেই সংকটময় মুহূর্তে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা’ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তিনি সম্মুখযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। অসামান্য সাহসিকতা ও অবদানের জন্য তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব ‘বীর উত্তম’ প্রদান করা হয়।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীতে দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭৫ সালের ২৫ আগস্ট জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই বছরের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান ছিলেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের প্রবর্তক। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন। তাঁর শাসনামলে তিনি জনগণের বিপুল সমর্থন অর্জন করেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ অপবাদ থেকে জাতিকে মুক্ত করে দেন তিনি।

দুঃখজনকভাবে, ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৫ বছর। তাঁর হঠাৎ বিদায় জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x