যশোর প্রতিনিধি
দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও যশোর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, তার স্ত্রী শেফালী জামান ও দুই ছেলে তানজীব নওশাদ পল্লব এবং তানভীর নওশাদ অর্ণবের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
আজ রবিবার (১৫ জুন) যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা জজ) নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনজীবী আশরাফুল আলম বিপ্লব।
দুদক সূত্রে জানা যায়, সাইফুজ্জামান পিকুল যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে সড়ক ও মহাসড়কের হাজারো গাছ বিক্রি ও বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি লোপাট করেছেন। সেই সময়ে তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, জমি ইজারা ও দোকান বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক যশোর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক এবং অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আসামি সাইফুজ্জামান পিকুল ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাইফুজ্জামান পিকুলসহ তার স্ত্রী-সন্তানদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে তিনি ২৯ মে আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাইফুজ্জামান পিকুল যশোর জেলা পরিষদের টানা দুই মেয়াদের চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সাথে সম্প্রতি নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের যশোর জেলা শাখার সহসভাপতি। পিকুল শেখ হাসিনার পতনের পরপরই ভারতে পালিয়ে যান বলে জনশ্রুতি রয়েছে। পিকুলের বড় ছেলে তানজীব নওশাদ পল্লব নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ২৩ আগস্ট তিনি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক হন। পরে জামিনে বের হয়ে ভারতে পালিয়ে যান বলে শোনা যায়। তার স্ত্রী শেফালী জামান ও ছোট ছেলে তানভীর নওশাদ অর্ণব কোথায় আছেন তা কেউ জানে না। তবে তাদের দীর্ঘদিন যশোরে দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রসঙ্গত, যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-খুলনা, যশোর-নড়াইলসহ জেলা পরিষদের আওতাধীন সড়কগুলোর গাছ অবৈধভাবে কেটে ফেলেন এবং এর অর্থ আত্মসাৎ করেন। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, একারণে যশোরবাসীর কাছে তিনি গাছখেকো পিকুল নামেও পরিচিতি লাভ করেন।