আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঈদুল আজহা চলছে, কিন্তু গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা। রবিবার দিনভর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ১০৮ জন এবং আহত হন আরো ৩৯৩ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এতথ্য জানায়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবারের পর ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা বর্তমানে ৫৪ হাজার ৮৮০ জন। সেই সঙ্গে আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৭ জনে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।
কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত আড়াই মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬০৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরো প্রায় ১৪ হাজার ৬৮৬ জন।
যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।
এদিকে সম্প্রতি গাজায় ফের দুই মাসের যুদ্ধবিরতিসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা হাজির করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই প্রস্তাবনায় নেতানিয়াহু সম্মতি দিলেও হামাস এখন অনুমোদন করেনি।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি