ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়কে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে সত্যিকারের দুর্ভিক্ষ চলছে। সোমবার স্কটল্যান্ডে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ভূখণ্ডে খাদ্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কয়েকটি খাদ্যকেন্দ্র স্থাপন করবে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের ঘোষণায় গাজায় দুর্ভিক্ষ এবং খাদ্য সংকটের ভয়াবহতা নতুন করে বিশ্বদৃষ্টি কেড়েছে। খাদ্যকেন্দ্র স্থাপনের এই পরিকল্পনা কবে থেকে বাস্তবায়ন হবে, কোথায় কোথায় এগুলো থাকবে— তা এখনো স্পষ্ট করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এতে কোনো রকমের ‘সীমান্ত বা বাধা’ থাকবে না, মানুষ সহজেই সহায়তা পাবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা চাই শিশুরা খাবার পাক। গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আমাদের অবশ্যই মানবিক কারণে সহায়তা করতে হবে।’ ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র এমন খাদ্যকেন্দ্র স্থাপন করবে, যেখানে মানুষ ‘চলে আসতে পারবে, কোনো সীমানা বা সীমাবদ্ধতা থাকবে না’।
তিনি আরও বলেন, এখনকার বাস্তবতা হচ্ছে, মানুষ খালি চোখে খাবার দেখতে পাচ্ছে কিন্তু ছুঁতে পারছে না। এটা একেবারেই পাগলামি। হামাসের সঙ্গে সমঝোতা কঠিন বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, হামাস জিম্মিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। তারা যখন জিম্মি ছেড়ে দেয়, তখন তাদের সেই ঢালটাও আর থাকে না। এটা খুবই জটিল একটা অবস্থা।
তিনি আরও জানান, কিছু ক্ষেত্রে তারা জানেন কোথায় হামাস জিম্মিদের রেখেছে। তবে জিম্মি উদ্ধারে বিভিন্ন পন্থা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে, যার কিছু খুব শক্তিশালী, আবার কিছু বুদ্ধিদীপ্ত আলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, আমি আগেই বলেছি, একটা সময় আসবে যখন আর আলোচনার সুযোগ থাকবে না— যদি না আপনি খুবই উদ্যমী হন। অথবা সোজা কথায় বললে, খুবই নির্মম ও সহিংস হন। এটা খুবই খারাপ একটা অবস্থা। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, আমরা গাজার অসহনীয় মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতির দিকে এগোতে হবে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির পর কী হবে, সে সম্পর্কেও আমাদের একটি আলোচ্য পরিকল্পনা হয়েছে। ট্রাম্পের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। উল্লেখ্য, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা একাধিকবার সতর্ক করেছে যে গাজায় ‘অনাহারের মুখে লাখো মানুষ’। ট্রাম্পের এই মন্তব্য এবং উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে কতটা বাস্তবায়িত হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।