গাজীপুরে বৃষ্টি মানেই জলাবদ্ধতা, যানজট আর নাগরিক দুর্ভোগ। ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কের বোর্ড বাজার থেকে টঙ্গী পযর্ন্ত দুই পাশে ভয়ংকর এক বিপদ নাম চোখের আড়ালে খোলা ড্রেন ও ম্যানহোল। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায়। নিচে কী আছে, সেটা বোঝার উপায় থাকে না। তখন যদি ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকে, সেটা মুহূর্তেই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হতে পারে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, এমন দুর্ঘটনায় এক পথচারী মহিলা প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের চলাফেরা করতে হচ্ছে এইসব সড়কে। সম্প্রতি প্রাণহানির ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, টঙ্গীর বিভিন্ন সড়ক, বিশেষ করে ব্যস্ততম ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক শিল্প এলাকা ঘেঁষা সড়কের দুই পাশে অন্তত ২৫টি ড্রেন ও ম্যানহোল দীর্ঘদিন ধরে খোলা বা ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এসব ম্যানহোলের চারপাশে নেই কোনো সতর্কতা চিহ্ন, এমনকি রাতে আলো না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরো বেড়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ড বাজার থেকে টংগী হোসেন মার্কেট এলাকা পর্যন্ত অন্তত ২৫ ড্রেন ও ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। দুই একটি চিকন বাঁশের খুটি দেওয়া হয়েছে। কিছু ম্যনহোলে রয়েছে লাল কাপড়। কিছু ম্যনহোলের উপর দিয়ে বৃষ্টির পানি থাকায় বুঝাই যাচ্ছেনা পানির নীচে রয়েছে ম্যানহোল। আর এসব টপকে হেঁটে যাচ্ছে পথচারীরা। সাড়ি সাড়ি ভাবে হেঁটে যাচ্ছে পোশাক শ্রমিকরা।গাজীপুর ক্রিসেন্ট হাসপাতালের সামনে রয়েছে খোলা দুটি ম্যনহোল। পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পোশাক শ্রমিক ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এই ম্যনহোলে একজন পড়ছিলো। মানুষ তাকে টেনে উঠাইছে।
পোশাক শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, সন্ধ্যার পর যখন অন্ধকার নেমে আসে, তখন এই খোলা ম্যানহোলগুলো হয়ে ওঠে আরও ভয়ংকর। এছাড়া স্কুল থেকে ফেরা শিশু, বাইক আরোহী কিংবা বৃদ্ধ মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাছা রিকশা চালক আমির হোসেন বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়ে গেছে। আবার যারা চুরি হতে দেখেছেন, তারাও চুপ থাকেন। চোরেরা লোহার ঢাকনাগুলো কেটে কেজি দরে বাজারে বিক্রি করে দেয়। কুনিয়া তারগাছ এলাকায় সড়কের পূর্ব পাশে ইমান আলী বলেন, এইখানে পাঁচটি ম্যান হল রয়েছে। এই ব্যস্ততম সড়কে কখন কে ম্যনহোলে পড়ে যায় বলা যায় না।
অনন্ত পোসাক কারখানার শ্রমিক মোঃ জিশান বলেন,সেদিন আমি এখানে কাত হয়ে পড়ে যাই। আমি খেয়াল করতে পারি নাই এখানে ম্যানহোল রয়েছে। বৃষ্টিতে দেখা যায়নি নিচে ম্যানহোল রয়েছে। পরে স্থানীয়রা আমাকে ওঠায়। গাজীপুর জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক অনার্স এসোসিয়েশন মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাইদ মোল্লা জানান, খোলা ম্যনহোলগুলো মৃত্যু ফাঁদ। এসবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন সচিব আল আমীন পারভেজ জানান, আমরা এসবের দায়িত্ব এড়াতে পারিনা। আমরা গাজীপুর মহানগরীর সবগুলো খোলা ম্যানহোলের হিসাব নিচ্ছি।এসব খোলা ম্যানহোল ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে দিবো। আমাদেরকে ইতিমধ্যেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা এসব নিয়ে কাজ শুরু করেছি।