১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ৬ জুন ২০২৫, ৬:৪০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

গাজীপুর মহাসড়কে যানবাহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া

প্রকাশ : ৬ জুন ২০২৫, ৬:৪০ পিএম

👁 22 views

ঈদের একদিন আগে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। মানুষের তুলনায় বাস কম থাকায় ঘরমুখোদের এখন শেষ ভরসা ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ ছোট যানবাহন। সড়কে এসে গাড়ির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেক যাত্রী।

আজ শুক্রবার (০৬ জুন) সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

তবে এসব বাহনে যেতে গিয়ে দ্বিগুণ তিনগুণ বা তারচেয়েও বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে বড় রকমের ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে গাজীপুর নগরীর চান্দনা-চৌরাস্তা ও ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে কেউ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে, কেউ বাবা-মা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। মাঝে মাঝে বাস এলেও প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে তাতে ওঠার অবস্থা নেই। একেই তো বাসে সিট খালি নেই, তারওপর লোকে ঠাসা।

সেখানে কথা হয় স্থানীয় একটি কারখানার পোশাক শ্রমিক জাহানারা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তাদের বেতন-বোনাস হয়েছে। তাই সকাল সাড়ে ৬টা থেকে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় গ্রামের বাড়ি রংপুরে যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা বাসে উঠতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে পাশের পেয়ারা বাগান এলাকা থেকে ৮০০ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠেছেন।

একই কথা জানান স্থানীয় পোশাক কারখানার শ্রমিক দম্পতি সানোয়ার হোসেন-জাহানারা বেগম। সকাল ৯টার দিকে জাহানারা বলেন, চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য শুক্রবার ৭টা থেকে বাসের অপেক্ষা করছেন। তারপরও বাসে উঠতে পারেননি। সিএনজি অটোরিকশার চালকরা দুইশ-আড়াইশ টাকার ভাড়া চাচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। শেষে ৫০০ টাকায় পিকআপ ভ্যানে করে গন্তব্যে রওনা হন।

সানোয়ার বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তারা পাশে ডিউটিতে থাকা পুলিশকে জানান। কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে পিকআপ ভ্যানে উঠেছেন।

তাদের মতো আরো অনেক যাত্রী এমন ভোগান্তির কথা জানান।

এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, শুক্রবার ভোরে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় একটি লরি বিকল হয়ে যায়। তখন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর লরিটি উদ্ধার করার পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়। তবে এর এক ঘণ্টা পরও গাড়ির চাপ কমেনি। এদিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে কারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায়ও গাড়ি না থাকায় বহু যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সেখানেও অনেককে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল, পশুবাহী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।

কালিয়াকৈর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক শ্রমিক অনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার কারখানা ছুটি হয়েছে দুপুরে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চন্দ্রায় যাই৷ সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। কোনো বাস-গাড়ি খালি নেই। কখন বাস পাব আর কখন বাড়ি পৌঁছাব জানি না।

নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের ওসি সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে কারখানা ছুটির পর বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা মোড় ও সফিপুর এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। শুক্রবার সকালেও একই অবস্থা চলছে। যানবাহন সঙ্কটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x