২ আগস্ট ২০২৫ শনিবার
প্রকাশ : ১ আগস্ট ২০২৫, ৪:২৫ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

চি‌কিৎস‌কের অব‌হেলায় রোগীর মৃত্যুর অ‌ভিযোগ

প্রকাশ : ১ আগস্ট ২০২৫, ৪:২৫ পিএম

কুড়িগ্রাম সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩০জুলাই)রাতে হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার পুরুষ ওর্য়াডের এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই রোগীর নাম ফুলবাবু দাস (১৮)। তিনি উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের পূর্ব নাওড়া গ্রামের সুখ চরণ দাসের ছে‌লে।

নিহতের স্বজন‌দের দা‌বি, বুধবার রাত ৮টার দিকে ফুলবাবুর শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে তাকে দ্রুত কু‌ড়িগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে তা‌কে ভ‌র্তি ক‌রে ৬ষ্ঠ তলায় নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ডাক্তার ও নার্স তা‌কে দেখ‌তে আসেন‌নি। ততক্ষণে মুখ দিয়ে রক্ত ‌বের হওয়া শুরু হয়। এরম‌ধ্যে রাত ১১টার দি‌কে মারা যায় সে।

এর আগে গত ২৫ জুলাই চি‌কিৎস‌কের অব‌হেলায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা জামাল বাদশাহ (৫৫) না‌মে এক রোগীর মৃত‌্যু হয়ে‌ছে। নিহ‌তের মা বকুল রাণী দাস বলেন, হাসপাতালে ভর্তি করার পর আমার ছেলের মুখ দিয়ে রক্ত বাহির হচ্ছিল। পরে শ্বাস কষ্টে ছেলে আমার মারা যায়। ছেলে মারা যাওয়ার সময় ডাক্তার ও নার্সকে আমরা পাইনি। চিকিৎসার অবহেলায় তার ছেলে ফুলবাবু মারা গে‌ছে ব‌লে দা‌বি ক‌রেন তি‌নি।

নিহত ফুলবাবু দাসকে নিয়ে আসা পল্লী চিকিৎসক বাদল সরকার জানান, রাত ৯টায় দিকে আমরা কাশির সাথে রক্তপরা ও শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো প্রায় এক ঘণ্টার বে‌শি সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো ডাক্তার বা নার্স দেখ‌তে আসেনি। জরুরি বিভাগ থেকে যেসব ওষুধপত্র দিয়েছে সেসব নিয়ে এসে দেখি এখানে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য চিল্লাচিল্লি করা হচ্ছে কিন্তু অক্সিজেন দেওয়া হয়নি। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে ডাক্তার আসার জন্য অনুরোধ করলেও কেউ আসেনি।

হাসপাতা‌লে প্রত‌্যক্ষদর্শী সবুজ কুমার ব‌লেন, ফুলবাবু অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে যাচ্ছিল ও তার নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তেছিল। পরে আমি তাকে বিছানায় শুয়ে রা‌খি। রোগীর অক্সিজেনের সমস্যা দেখে নার্সদের ডাক দিই কিন্তু প্রায় আধাঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেউ আসেনি। তনক্ষণে রোগী মারা গে‌ছে। মৃত ব‌্যক্তি‌কে তারা ইসিজি করতে বলে আর সেই মৃত রোগীকে স্যালাইন দেয়।

সেখা‌নে দা‌য়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স কোহিনুর খাতুন বলেন, আমরা একটা সেকেন্ডের জন্য বসে নাই। এখা‌নে শতশত রোগী। সে সময় একসঙ্গে সাতজন রোগী আসায় রিসিপশন ভরা ছিল। এরকম ভরা থাকলে কি কাজ করা সম্ভব। দায়িত্বে আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না ব‌লে দা‌বি ক‌রেন তি‌নি। এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক আব্দুল হান্নান বলেন, রোগীর অবস্থা আশংকাজনক ছিল। ওই রোগীর বিষয়ে কেউ কিছু আমাকে জানায়নি। আপনারা আবাসিক মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে কথা বলুন।

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন চি‌কিৎস‌কের অব‌হেলার বিষয়‌টি অস্বীকার ক‌রে ব‌লেন, ঘটনা‌টি শোনার পর আমি সকা‌লে তদন্ত ক‌রে‌ছি। সে সময় রোগীর চাপ ছিল ছিল খুব। যি‌নি মারা গে‌ছেন তার শরী‌রে প্রচুর জ্বর ও মুখ দি‌য়ে রক্ত বের হ‌চ্ছিল। তা‌কে রেফার করা হ‌লেও তারা অন‌্যত্র যান‌নি।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x