ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির টেন্ডার নিয়ে ঘটছে একের পর এক তুঘলকি কাণ্ড। ৫ হাজার টেন্ডার ফি কে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করে সম্পর্কিত একটি সিন্ডিকেটের হাতে টেন্ডার তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত এ টেন্ডার-প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার আহ্বানসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে কোম্পানির এমডি বরাবরে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ২৭ মে জুলকারনাইনস ট্রেড অ্যান্ড টেক এর স্বত্বাধিকারী আবু সাঈদ অভিসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান এক সাথে একটি অভিযোগ প্রদান করে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সিসিসিএল বাণিজ্য-এমপিআইসি ২০২৪-২৫/২৫৬, তারিখ- ০৫/০৫/২০২৫ ইং সূত্রে বর্ণিত উন্মুক্ত দরপত্র আহবানে বিগত ১৯/০৫/২০২৫ইং তারিখে ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা দিয়ে দরপত্র ক্রয় করেন জুলকারনাইনস ট্রেড অ্যান্ড টেকের প্রোপাইটর আবু সাঈদ অভি। যাহার ক্রমিক নম্বর- ০৮৮৩৩। হিসাব খাতা নম্বর- সিএ-১২/৫৩৮০ এবং দরপত্রের শর্তমোতাবেক কাঙ্ক্ষিত মূল্যের ৭ শতাংশ ছাতক সিমেন্ট কোম্পানী লি. বরাবরে পে অর্ডার করে দরপত্রে অংশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেন। তৎপরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রথম দরপত্র জমা ও ফলাফল প্রকাশের স্থান হিসেবে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির অফিসে জমা দিতে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন তিনিসহ আরো ৫৭টা দরপত্র বিক্রি হয়েছে, তবে আটজন তা জমা দিতে পারলেও বাকি ৪৯ জন ক্রয়কারী অস্ত্রধারী সিন্ডিকেট সদস্যদের বাধার কারণেই জমা দিতে পারছেন না এবং ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. এর কর্মচারী কর্মকর্তা ও পুলিশ এবং আনসার এর সামনেই তাদেরকে কিল-ঘুষি মেরে গেটের বাইরে বের করে দেয়। তিনি আবারো জমা দেওয়ার চেষ্টা করলে সিন্ডিকেট সন্ত্রাসীরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় তাকে। তারপর তিনি সাথে সাথেই দরপত্রে উল্লেখিত তৃতীয় কেবল জমা দেওয়ার স্থান সিলেট গণপূর্ত অফিসে এসে দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য রওনা হন। কিন্তু দুপুর ১২টায় এসে দেখেন এখানেও সিন্ডিকেটের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দরপত্র জমাদানে বাধা দেয়। তিনি জমা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের দরপত্র জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং রাষ্ট্রের প্রচুর মুনাফা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে অসৎ উদ্দেশ্যে ৮টি কোম্পানি সিন্ডিকেট করে এ টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি কাউকে। এতে দেশের স্বনামধন্য প্রায় অর্ধশত দরপত্র ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এমতাবস্থায় ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. এর কর্মকর্তা ও সরকারি অন্যান্য কর্মকর্তা এবং জমাকৃত দরপত্র গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিগত ২৫ মে অনুষ্ঠিত নিলামের পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করে বাতিল আদেশসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের এখন সময়ের দাবি।
আবু সাঈদ অভি বলেন, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রহমান ৫ আগস্টে পূর্বের ন্যায় এখনো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর হাজি স্বপনকে স্ক্র্যাপ মালামালের অকশন ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার কূটকৌশলে ব্যস্ত রয়েছেন। হাজি স্বপন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগিতার চেয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিশেষ করে হাজি সেলিম, জাহাঙ্গীর কবীর নানক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গোলাম রব্বানী গংদের সাথে চলাফেরা করতেন বেশি এবং তাদের মদদে সে সব অপকর্ম করার সুযোগ পেত। ফ্যাসিস্টদের সহযোগিতায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় টেন্ডারবাজি, দখলবাজির রমরমা ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। অভি বিতর্কিত এ টেন্ডার বাতিল করে নতুন টেন্ডার আহ্বান কথা জানান।
আলাপকালে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. এর এমডি প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, টেন্ডার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আগামী রবিবার বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।