২ আগস্ট ২০২৫ শনিবার
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ৩:১১ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে ‘বিমানে বোমা আছে’ ফোন মায়ের

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ৩:১১ পিএম
ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে 'বিমানে বোমা আছে' ফোন মায়ের

গতকাল বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটে বোমা রয়েছে বলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। বোমা থাকার আশঙ্কায় ফ্লাইটটিতে ৩ ঘণ্টার নিবিড় তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো বোমা পাওয়া যায়নি।

এঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব জানায়, ঘটনাটির সঙ্গে পারিবারিক বিষয় জড়িত। ছেলে যেন পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডুতে যেতে না পারে, সেজন্য মা ফোন দিয়ে জানান বিমানে বোমা রয়েছে।

আজ শনিবার (১২ জুলাই) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান।

ডিজি বলেন, গতকালকে ঘটনা ঘটে। সেটি হলো ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বোমা রয়েছে এমন একটি ফোন কল করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানানো হয়। যার ফলে ওই বিমানে যাত্রা স্থগিত করা হয় এবং তিন থেকে চার ঘণ্টা তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি। এঘটনায় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে মারাত্মক ক্ষুণ্ন হয়। ইতিপূর্বেও এধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। টেলিফোনের মাধ্যমে বোমার খবর দেওয়া হয়, পরবর্তীতে তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, এঘটনার পরপরই আমরা অনুসন্ধানে নামি। সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করি। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সহযোগিতা করেছে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনার তদন্তে জানা যায়, ইমন নামে এক ব্যক্তি পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে এই ফ্লাইটে করে নেপাল যাচ্ছিলেন। বিষয়টি ইমনের মা ও তার স্ত্রী জানতে পারেন এবং তার যাত্রা বন্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু তারা কোনোভাবে সক্ষম হয়নি। তখন ইমনেরই আরেক বন্ধু ইমরান তাদের পরামর্শ দেন যদি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে জানানো হয় বিমানে বোমা আছে তাহলে যাত্রাটা স্থগিত হয়ে যেতে পারে। সে অনুযায়ী ইমনের মা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে বিমানে বোমা থাকার তথ্য জানান।

ডিজি আরো বলেন, এবিষয়ে আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই, এটি একটি গর্হিত কাজ। এসব কাজে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং আমাদের জাতীয় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। কোনোভাবেই যেন এধরনের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে গ্রহণ করা না হয়। তারপরও গ্রহণ করলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

১১ জুলাই বিকেলে বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তখন একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোনকলে বিমানে বোমা থাকার হুমকি আসে। উড়োজাহাজটি তখন ১৪২ যাত্রী ও সাতজন ক্রু নিয়ে ট্যাক্সি করছিল। পরে বিমান বাহিনীর টাস্ক ফোর্স ও এভসেক দ্রুত বিমানের চারপাশে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড ঘটনাস্থলে আসে। পরে র‍্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে উড়োজাহাজের অভ্যন্তর ও লাগেজ পরীক্ষার কার্যক্রম করে। সব যাত্রীদের নিরাপদে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে স্ক্রিনিং শেষে লাউঞ্জে পাঠানো হয়েছিল।

রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে নিরাপত্তাতল্লাশি শেষ হয় এবং কোনো ধরনের বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া যায়নি।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x