৩১ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৭ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জিডিপি প্রবৃদ্ধির নিম্নহার, বিনিয়োগে মন্দা নিয়েই আসছে মুদ্রানীতি

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৭ পিএম

রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে মন্দা, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির নিম্নহার, এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেই ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি (জুলাই–ডিসেম্বর) ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করবে। অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য রাখতে প্রতি বছর দুই দফায় (জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য) মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ সম্পদের পরিমাণ নির্ধারণের রূপরেখা তুলে ধরা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক এবার ‘নিয়মরক্ষার মুদ্রানীতি’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যেখানে নীতি সুদহার ও বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ব্যবসায়ীরা এখন নতুন বিনিয়োগে অনাগ্রহী। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত সুদহার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২৫–২৬ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত থাকলেও, এবারের ঘোষণায় বড় কোনো নীতিগত পরিবর্তন থাকছে না। প্রধান লক্ষ্য থাকছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬.৪ শতাংশ, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অথচ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯.৮ শতাংশ। এমন বাস্তবতায় ঋণপ্রবাহের বর্তমান ধারা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। তবে পরবর্তী দুই অর্থবছরে তা বাড়বে। ২০২৫–২৬ অর্থবছরে ৪.৯ শতাংশ এবং ২০২৬–২৭ অর্থবছরে ৫.৭ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও তা এখনও উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৪৮ শতাংশ হয়েছে, যা মে মাসে ছিল ৯.০৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত নীতি সুদহার কমানোর কোনো সুযোগ নেই।

অন্যদিকে, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৩.৬ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করছে।

চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যাংকের বাইরের উৎস হিসেবে সঞ্চয়পত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৪ হাজার কোটি এবং ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৯ হাজার কোটি টাকা।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x