বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশের জনগণই বিএনপির তথা দেশের সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।’ তিনি বলেন, কথামালার রাজনীতি নয়, আমরা জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি শুরু করি। বাংলাদেশ এখন একটি পরিণত দেশ। এই পরিণত বাংলাদেশে জনগণ আর বিভেদ–বিরোধ ও প্রতিহিংসা–প্রতিশোধের রাজনীতি চায় না। জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চায়।
রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ছাত্রদলের ছাত্রসমাবেশে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় শুধুমাত্র ছাত্রদলের ২ হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। যেই সংগঠনে তোমাদের মতো সাহসী মায়ের সন্তানেরা আছে, সেই সংগঠনের নেতাকর্মীদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।
ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে উচ্চকিত বিএনপি আগামী দিনে মানবিক মানুষ তৈরির রাজনীতি শুরু করতে চায় বলে জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপির আগামী দিনের নীতি কর্মসংস্থান সৃষ্টি আর নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার রাজনীতি। বিএনপির নীতি আজকের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করার রাজনীতি। মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত কর্মমূখী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের রাজনীতি।
ফ্যাসিস্ট চক্র শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করেছে। কারিগরি ও ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে বিএনপি আগামী দিনে শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজাতে কাজ করছে বলে জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যদি স্কুল পর্যায় থেকে যা যে ক্ষেত্রে আগ্রহ আছে, সেদিকে ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়, এ ধরনের শিক্ষা থাকলে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। তাহলে একজন শিক্ষার্থী স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হলে তাকে বেকারত্বের অভিশাপ পোহাতে হবে না। বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকলে একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর শেষ করার পর চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ করতে হবে না। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএনপি স্কুল পর্যায় থেকে ব্যবহারিক কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে আগামী দিনে শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজানোর কাজ করছে।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ছাত্র সমাবেশ শুরু হয়। বিকেল সোয়া তিনটার দিকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরপর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, হাবিব উন নবী খান, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ।