৩ আগস্ট ২০২৫ রবিবার
প্রকাশ : ২ আগস্ট ২০২৫, ১১:১০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জুলাই ঘোষণাপত্রে সশস্ত্র বাহিনী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের স্বীকৃতি দাবি

প্রকাশ : ২ আগস্ট ২০২৫, ১১:১০ পিএম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রতিষ্ঠান হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের অবদানের স্বীকৃতি জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করার দাবি জানানো হয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির এক অনুষ্ঠানে। গৌরবোজ্জ্বল জুলাই ৩৬ উদযাপনের অংশ হিসেবে শনিবার (২ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়। রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

সভাটি সঞ্চালনা করেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। এতে আরও বক্তব্য দেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনিশ দেওয়ান, কর্নেল (অব.) মশিউজ্জামান, সামরিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, এজিএম আমিরুল ইসলাম, কর্নেল মোশাররফ, মেজর (অব.) জিয়া, লে. (অব.) খান সোয়েব আমানুল্লাহ, সামরিক কর্মকর্তা ইমরান, সামরিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন এবং মেজর আফসারী।

সভায় মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘যখন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একীভূত হয়, তখনই মুক্তিযুদ্ধ বা গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বিবেকের দায় থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’

সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত সেনারা রাজনৈতিক দাবিতে রাজপথে নামেন না- এ কথা উল্লেখ করে মঞ্জু বলেন, ‘কিন্তু সেদিন ডিওএইচএসগুলোতে সেই রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়েছিল বলেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পেরেছিল। তাদের মাঠে নামার কারণেই গণঅভ্যুত্থান সহজ হয়েছে।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ফ‍্যসিবাদের অন্তিম সময়ে র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি, মূলধারার কিছু মিডিয়া, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও সাংবাদিক জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সেদিন আমাদের মাঝে আশার আলো সঞ্চারিত করেছিল। সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনিশ দেওয়ান বলেন, ‘সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। জগদ্দল পাথরকে সরানো গেলেও তা সম্পূর্ণরূপে সরানো যায়নি। ফুটো বল দিয়ে খেলা চলে না।’

লে. কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, দু-একজনের অপকর্মে পুরো বাহিনী কলুষিত হতে পারে না। জুলাইয়ের যুদ্ধ এখনো চলমান। সংস্কার দরকার মিডিয়া ও সশস্ত্র বাহিনী উভয় ক্ষেত্রেই। সংস্কারবিহীন নির্বাচন মানেই স্বৈরতন্ত্রের পুনর্বাসন। কর্নেল মোশাররফ বলেন, ‘হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ থেকে পিছু হটা যাবে না। সেদিন আমরা সামরিক কর্মকর্তারা আমাদের সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম, বিবেকের তাড়নায় আমরা আর সেদিন ঘরে থাকতে পারিনি। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের বিচার আমরা দেখতে পারি নাই।

সেনা কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, হাসিনার ফ্যাসিবাদকে না করে দেওয়ার জন্য ৩৬ জুলাই আমরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানাই। সেদিন আমরা নেমে আসায় জনগণ আরো বেশি সাহসী হয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তখন পর্যন্ত আমরা কিন্তু জানতাম না সেটি হাসিনার শেষ দিন। মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার বলেন, দেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছোটখাটো মতপার্থক্য ভুলে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের উচিত অবিলম্বে ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x