নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর মাজার বস্তিতে ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। এঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। তার মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানায়, পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোটর শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান মতির আশ্রয়ে ঝুট ব্যবসা করতেন। গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরণ এই প্রতিষ্ঠানে লিখিত চুক্তিনামা করে ঝুট ব্যবসা করেন।
সম্প্রতি টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমনের পরিচয়ে ৪০/৫০ জন লোক বাধা দেয়। দুই পক্ষই ঝুট নিতে কারখানায় প্রবেশ করলে কর্তৃপক্ষ সবাইকে বের করে দেয়। এসময় উত্তেজনা তৈরি হলে কর্তৃপক্ষ ঝুটের মাল দেওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে দুই পক্ষ কারখানার সামনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। বিকেলে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, বিবদমান দুই পক্ষ কারখানার দুই দিকে বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। দুই পক্ষের মহড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন বলেন, ওমর ফারুকের নামে চুক্তি। তাকে ব্যবসা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মাল আনতে গিয়ে কিরণের লোকজন হামলা করে ৮/১০ জনকে মারধর করে ৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরণ বলেন, আমার নামে চুক্তিনামা। আমি ব্যবসা করছি। কিন্তু আজ সুমন সরকারের লোকজন বাধা দিচ্ছেন। আমার কেউ হামলা বা ছিনতাই করেনি। সুমন সরকারের অভিযোগ মিথ্যা। বরং আমার ১০/১২ জন কর্মী আহত হয়েছে।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান বলেন, একই ঘটনায় ১৭ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। তার মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি তিনজন হলেন সোহেল (৩৪), আবু সাইদ (৩৩) ও আনিস (৪১)।
পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মাকসুদুর রহমান বলেন, অনেক চুক্তি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর রাশেদুল ইসলাম কিরণ চুক্তি করে ঝুটে নেন। গতকাল (১৭ জুন) সুমন সরকারের রেফারেন্সে জনৈক ওমর ফারুক নামে একজনের নামে নতুন চুক্তি হয়। ওমর ফারুকের লোকজন মাল নিতে আসলে কিরণের পক্ষ বাধা দেয়। এরপর আমরা কাউকেই মাল দিচ্ছি না। এটা নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান জানান, যার নামে চুক্তি সে ব্যবসা করবে। ঝুট নিয়ে ঝামেলা সহ্য করা হবে না। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনা জানি না। অভিযোগ দিলে মামলা হবে।