২৭ জুলাই ২০২৫ রবিবার
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ৯:৫৬ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ৯:৫৬ এএম
টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত। ছবি: সারাবেলার খবর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে পানি প্রবেশ করে ফেনীর উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলার অন্তত ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বিকেলে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় নদীর পানি প্রবেশ করে নদীতীরবর্তী সায়েদপুর, চর ইঞ্জিমান, মাদরাসা পাড়া, আমতলী, ইতালি মার্কেট, রহমতপুর, তেল্লার ঘাট, কাজীর হাটসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল আলম বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর না থাকায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের সবকিছুই বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু শনিবারের জোয়ার ছিল অস্বাভাবিক। এমন উচ্চতার পানি আগে কখনো দেখিনি। আমরা এ অবস্থার দ্রুত সমাধান চাই। একটি টেকসই রেগুলেটর নির্মাণ না হলে এ জনপদে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।

মাহমুদুল হাসান নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছি। প্রায় সময় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। অথচ আমরা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

এদিকে জোয়ারের লোনাপানিতে হুমকিতে পড়েছে এসব এলাকার কৃষিজমি ও মৎস্যঘের। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এসব এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় মৎস্যচাষি আবু রায়হান বলেন, প্রতিদিন জোয়ারের লোনাপানি ঢুকে মৎস্য খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। বর্ষায় পানি আরো বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় মাছের ঘের বা ফসলি জমিতে বিনিয়োগ করলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি।

কৃষি উদ্যোক্তা আবু সাঈদ রুবেল বলেন, জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। এসব অঞ্চলের অনেকেই এখন আর নতুন করে চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, জোয়ারের পানি নদী হয়ে খালে প্রবেশ করে চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, বগাদানা ও চর মজলিশপুর এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি এসব এলাকায় চাষাবাদ না করে উঁচু জমিতে ফসল আবাদ করতে। জেলা কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. আবু মুসা রকি বলেন, আমরা স্লুইস গেটসহ প্লাবিত অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। সেখানে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১৪৬ মিটার। অমাবস্যায় এমনিতেই পানি বাড়ে, তার মধ্যে রেগুলেটর না থাকায় সাগরের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এজন্য নিম্নাঞ্চলের যেসব বাড়িঘর রয়েছে সেগুলোতে পানি জমেছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x