নিয়তি এমন হবে ভেবেনি কেউ। মাকে ডাক্তার দেখাতে এসে ট্রেনের ধাক্কায় ছেলের প্রাণ হারানোর কয়েক ঘন্টা পর মারা গেলেন মা ও। ডাক্তার দেখিয়ে তারা বাড়ি ফিরবেন তবে লাশ হয়ে। এমন দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেছে। কিছু বলার মতো ভাষা নেই। এমন মর্মান্তিক দূঘটনার খবরে গ্রাম জুড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না কেউ। ফেনীতে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কা লেগে ছেলের মৃত্যুর পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মা ফাতেমাতুজ জোহরারও (৬২) মারা গেছেন।
এর আগে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ছেলে হাফিজুল ইসলামকে (৪২) কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় শহরের গোডাউন কোয়ার্টার রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজুল ইসলাম ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের মিয়াজী বাড়ির হারেস আহম্মেদের বড় ছেলে ও হারেস আহম্মেদের স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোডাউন কোয়ার্টার এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যানজটে আটকে পড়ে। এ সময় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাফিজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার মাকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। মারাত্মক আহত সিএনজি অটোরিক্সা চালককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের আরেক ছেলে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মাকে ডাক্তার দেখিয়ে বড় ভাই ফেনী থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেছে। কিছু বলার মতো ভাষা নেই। নজরুল করিম নামে নিহতের এক স্বজন বলেন, হাফিজুল ইসলাম আগে রাজধানীর একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। পরবর্তী ফেনীতে এসে ব্যবসায় করতেন। অসুস্থ মাকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেনী থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, নিহত হাফিজুল ইসলামের মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নেওয়ার পর সেখানে তার মাও মারা যান। আহত সিএনজি অটোরিকশা চালক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।