দীর্ঘ প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে সোমবার (৫ মে) দেশে ফিরছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দেশে আসছেন পুত্রবধূ তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। ঢাকায় এসে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় উঠলেও জোবাইদা রহমান ধানমন্ডিতে তার বাবার বাসায় অবস্থান করবেন।
খালেদা জিয়ার জন্য সরকারি ও দলীয় নিরাপত্তা প্রটোকল থাকলেও জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তা কে দেবে? জানা গেছে, পুলিশ জুবাইদা রহমানকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তাকে কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে রবিবার সভায় বসছেন ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে তার বাসা পরিদর্শনে যাবে পুলিশের একটি দল।
জিয়া পরিবারের এই সদস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ৩০ এপ্রিল পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে চিঠিতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে- একজন সশস্ত্র গানম্যান, গাড়িসহ পুলিশ প্রটেকশন, বাসায় পুলিশ পাহারা এবং বাসায় আর্চওয়ে স্থাপন।
জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ? এ ব্যাপারে জানতে শনিবার বিকালে ঢাকাটাইমস যোগাযোগ করে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমের সঙ্গে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার আমাদের একটি মিটিং রয়েছে। এ মিটিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হব, কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল আইজিপিকে দেওযা বিএনপির চিঠিতে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা শেষে আগামী ৪ মে দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন। ডা. জোবাইদা রহমান তার সফরসঙ্গী হিসাবে দেশে আসবেন এবং ধানমন্ডিস্থ তার পিতার বাসায় অবস্থান করবেন।
জিয়া পরিবারের সদস্য এবং তারেক রহমানের সহধর্মিণী হিসাবে জোবাইদা রহমানের জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। সে কারণে তার ঢাকাস্থ বাসায় অবস্থানকালীন এবং যাতায়াতের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। ওই চিঠিতে একজন সশস্ত্র গানম্যান, গাড়িসহ পুলিশ প্রটেকশন, বাসায় পুলিশ পাহারা এবং বাসায় আর্চওয়ে স্থাপন করতে অনুরোধ করা হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন যান খালেদা জিয়া। লন্ডন ক্লিনিকে ১৭ দিন চিকিৎসার পর ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন তিনি। সেখানে থেকেই চিকিৎসা নেন তিনি।
সোমবার (৫ মে) খালেদা জিয়া বাংলাদেশ বিমানে দেশে ফিরবেন বলে কদিন ধরে আলোচিত হচ্ছিল। বিমানের ওই ফ্লাইটটির শিডিউল ছিল লন্ডন-সিলেট-ঢাকা। বিমান কর্তৃপক্ষ শিডিউলটি লন্ডন-ঢাকা-সিলেট করতে চাইলেও যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে রাজি হননি খালেদা জিয়া। তিনি সিলেট হয়েই ঢাকায় আসবেন বলে জানান।
তবে সর্বশেষ আজ জানা গেল খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন। সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে সোমবার কখন তিনি ঢাকায় অবতরণ করবেন সেটি এখনো নিশ্চিত হয়নি।