বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন একটি দলের পকেটে ঢোকার চেষ্টা করছে। জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি, গণহত্যার বিচার ও সংবিধানের মৌলিক সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে দেশের মানুষ আওয়ামী স্টাইলের কোন নির্বাচন হতে দেবে না।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বগুড়ার টিটু মিলনায়তনে শহর জামায়াতের ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাই। তবে তার আগে জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিশ্চিত করে সেই সনদের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত বিচারক, আইনজীবী, সাক্ষীসহ সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনের ভেতরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদেরও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, দেশের মানুষ বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। কিন্তু তার চারপাশে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করছে এবং একটি দলের পকেটে ঢুকিয়ে দিতে চক্রান্ত করছে। জুলাই অভ্যুত্থান কোন দল বা ব্যক্তির নেতৃত্বে হয়নি—১৮ কোটি মানুষ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির জন্য রক্ত দিয়েছ।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি দল যুক্তিতে না পেরে সরকারকে যেনতেন নির্বাচন আয়োজনে চাপ দিচ্ছে। অথচ দেশের অধিকাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। কালো টাকা, সন্ত্রাস, ব্যালট বাক্স ছিনতাই প্রতিরোধ ও সবার ভোটের ম‚ল্যায়নের জন্য পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শহর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রহিম ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। শহর সেক্রেটারি অধ্যাপক আ.স.ম আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, শহর নায়েবে আমির মাওলানা আলমগীর হোসাইন, মাওলানা আব্দুল হালিম বেগ, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক রফিকুল আলম, মো. আল-আমিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শহর সভাপতি আজগর আলী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি হাবিবুল্লাহ খন্দকার। সম্মেলনে প্রায় দেড় হাজার নারী-পুরুষ রুকন অংশ নেন।