৮ জুলাই ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তজুমদ্দিনে ধর্ষণের নেপথ্যে সতীনের আক্রোশ: পুলিশ

প্রকাশ : ৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬ এএম

ভোলার তজুমদ্দিনে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাদের নোয়াখালীর হাতিয়া ও ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার এসব তথ্য উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীর ধর্ষণের পেছনে চাঁদা দাবি নয়; তাঁর স্বামীর তৃতীয় স্ত্রীর আক্রোশের জেরেই এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর ওই সতীনসহ সব মিলিয়ে এ মামলার চার আসামিই গ্রেপ্তার হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার তজুমদ্দিনের মাওলানাকান্দির কামারপট্টিতে গিয়ে নতুন কিছু তথ্য জানা গেছে। সেখানেই থাকেন ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীর তৃতীয় স্ত্রী ঝর্ণা বেগম। সাংবাদিক দেখে আশপাশের ঘরের নারী বাসিন্দাদের উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা যায়। নানা অজুহাতে ২৯ জুনের ঘটনাটি এড়িয়ে যান তারা। পুরুষ সদস্যরাও মুখ খুলতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে বৃদ্ধ দুই নারী জানান, দিন-দুপুরে এমন নির্যাতনের ঘটনায় তারা হতবাক। ভয়ে নির্যাতিতা নারীকে সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারেননি। এখন তারা অনুতপ্ত। এ ঘটনায় জড়িত সবার বিচার চান তারা।

মামলার এজাহার ও সরেজমিন জানা গেছে, মাওলানাকান্দির বাসিন্দা ঝর্ণা বেগমকে ৮ মাস আগে বিয়ে করেন ঢাকার এক রেস্তোরাঁ শ্রমিক। ঝর্ণা তাঁর তৃতীয় স্ত্রী। এলাকাবাসীর ভাষ্য, গৃহপরিচারিকার কাজ করা ঝর্ণা ধারদেনা করে স্বামীকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন। পরে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব দেখা দিলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ জন্যই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ জুন রাতে স্বামীকে ডেকে আনেন তিনি। আগে থেকেই ভাড়া করে রাখেন আলাউদ্দিন, মো. ফরিদ, রাসেলসহ অন্যদের। রুবেল আসার পরপরই তারা ঝর্ণার দেওয়া ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও দেনমোহরের টাকা ফেরত চান।

এ জন্য রাতভর নির্যাতন করা হয় ওই ব্যক্তিকে। খবর পেয়ে ২৯ জুন সকালে তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে আসেন প্রথম স্ত্রী। এ সময় ওই চক্রের একাংশ স্বামীকে বাইরে নিয়ে যায়। আর ঝর্ণার পাহারায় ওই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে অন্যরা। এদিকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর ভয়ে ঘটনা জানাতে সাহস পাননি ওই দম্পতি। নির্যাতিত হোটেল শ্রমিক বলেন, মামলা করার পরও হুমকি-ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ঢাকার কর্মস্থলে ফিরতে না পেরে অর্থ সংকটে পড়েছেন। সামাজিকভাবেও হেয় হচ্ছেন।

ঝর্ণাকে বিয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মীয় ঝর্ণা। সে হিসেবেই পরিচয়। এক সময় তাঁকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতে বাধ্য করে ঝর্ণা। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয় তিনি অস্বীকার করেন। ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। এ জন্য ৪ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পুরো ঘটনাই ঝর্ণার পূর্বপরিকল্পিত। ৩০ জুন মামলার পরপরই ঝর্ণাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে ৫ নম্বর আসামি মো. মানিককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার এসব তথ্য নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. সোহান সরকার জানান, মামলার প্রধান আসামি আলাউদ্দিনকে নোয়াখালীর হাতিয়া ও দুই নম্বর আসামি মো. ফরিদকে বোরহানউদ্দিন থেকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করবে পুলিশ। এ ছাড়া কলেজ ছাত্রদলের নেতা রাসেলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x