তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য আগামী ২১ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রিভিউ ((পুনর্বিবেচনা) শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১৪ বছর আগে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় রিভিউ চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি) করে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটাই করা হবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে তা কখন থেকে কার্যকর হবে?
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আপিল বিভাগ চাইলে লিভ দিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন বা লিভ না দিয়েও সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরলে কীভাবে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে আপিল বিভাগ চাইলে নতুন করে পর্যবেক্ষণ দিতে পারেন।
একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রথা অনুসরণ করব। লিভ দিয়ে পুরো বিষয়টি শুনব।’ পরে আদালত লিভ মঞ্জুর করে শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেন।
রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।
পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও রিভিউ আবেদন করেন। এ ছাড়া নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন।