তরুণ উদ্ভাবকদের মেধা ও উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে নতুন গতি আনবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, শুধু প্রতিভা থাকলেই হবে না, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতিগত সহায়তা। সরকার এ বিষয়ে সম্পূর্ণ আন্তরিক। বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক ‘টেলিকম ও ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০২৫’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শীষ হায়দার বলেন, দেশের প্রযুক্তি খাতে এখন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ থাকলেও, তরুণদের উদ্ভাবনই সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার হাতিয়ার হবে। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত উদ্ভাবনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হোক। এখানে অনেকেই নিজেদের প্রয়োজন থেকেই নানা সমাধান বের করেছে—কেউ সাশ্রয়ী হাসপাতাল ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বানিয়েছে, কেউ অটিস্টিক শিশুদের জন্য ইন্টার্যাক্টিভ লার্নিং সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এগুলোই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার।
তরুণ উদ্ভাবক-উদ্যোক্তাদের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য নতুন তহবিল, প্রশিক্ষণ এবং প্রকল্পভিত্তিক অর্থায়নের সুযোগ থাকছে। সরকার তিনটি নতুন প্রকল্পের আওতায় তরুণদের উদ্ভাবনী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। অর্থ শুধু অনুদান হিসেবে নয়, ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবেও ব্যবহৃত হবে।
এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী (অব.) বলেন, তরুণদের প্রযুক্তি-ভিত্তিক উদ্ভাবনে দরকার বাস্তব সমস্যার সমাধান। আমরা কানেক্টিভটি দিচ্ছি, কিন্তু ইউটিলিটি আসছে না। কৃষক ইন্টারনেট পাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেটা দিয়ে তার কি প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে? সার, বাজারদর, পরিবহন বা ফসল সংরক্ষণের মতো জরুরি তথ্য কি তাকে পৌঁছে দিচ্ছে প্রযুক্তি?
চেয়ারম্যান বলেন, টেলিকম খাত শুধু কানেক্টিভটির জন্য না, এটি এমন একটি সেক্টর, যা কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই অন্য খাতগুলোর ভিত্তি তৈরি করে দেয়। তাই টেলিকম সার্ভিস যদি মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান না দেয়, তাহলে তা কেবল বিনোদনের বাহন হয়—উন্নয়নের অংশ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সেবা ডিজাইন করতে হবে এভাবে, যাতে গ্রাহকের জীবনযাত্রা সহজ হয়, তার সমস্যার বাস্তব সমাধান মেলে। আমরা শুধু তার পকেটের অবশিষ্ট টাকা খরচ করিয়ে দিচ্ছি—এটা টেকসই হবে না। স্বাস্থ্যসেবায় এখনো আমরা একটি কার্যকর টেলিমেডিসিন মডেল দাঁড় করাতে পারিনি৷ উদ্ভাবন তখনই টেকসই হবে, যখন তা সমস্যাকে সমাধান করবে।