Site icon সারাবেলার খবর

দীপিকা পাডুকোনের প্রেমিক, কে এই মুজাম্মিল ইব্রাহিম?

২০০৭ সালে ‘ধোকা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখেন তিনি। তার পর বেশ কিছু কাজ করলেও তেমন নজর কাড়েননি। তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন) দিনভর আলোচনায় মডেল ও অভিনেতা মুজাম্মিল ইব্রাহিম। ১৮ বছরের কেরিয়ারে মাত্র ৩টি ছবিতে কাজ। তবে এই মুহূর্তে কাজের জন্য তাকে নিয়ে মোটেই চলছে না আলোচনা।
বলিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে একসময় নাকি প্রেম ছিল মুজাম্মিলের। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি অভিনেতার। স্বাভাবিক ভাবেই রণবীর-পত্নীর প্রাক্তন প্রেমিক হিসেবে দাবি করা মুজাম্মিলের প্রতি সকলেরই আগ্রহ তুঙ্গে। কিন্তু কে এই মুজাম্মিল? বলিউডে কতদিনই বা কাজ করেছেন তিনি?

‘ওম শান্তি ওম’ ছবির মাধ্যমে ২০০৭ সালে বলিউডে পা রেখেছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। যদিও এর আগে ২০০৬ সালে কন্নড় ছবি ‘ঐশ্বর্য’ দিয়ে কেরিয়ার শুরু তার। বিখ্যাত ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার প্রকাশ পাড়ুকোনের কন্যা দীপিকাও অভিনেত্রী হওয়ার আগে ছিলেন একজন মডেল। ২০০৪ সালের দিকে পুরোপুরি মডেলিং শুরু করেন। মুজাম্মিলের সঙ্গে নাকি তার পরিচয় সেই সময় থেকেই।

কে এই মুজাম্মিল ইব্রাহিম?
১৯৮৬ সালের ২৫ অগস্ট কাশ্মীরের শ্রীনগরে জন্ম মুজাম্মিলের। প্রথমে মডেলিং, তার পর অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু। ২০০৩ সালে, মুজাম্মিল ‘গ্ল্যাড্র্যাগস ম্যানহান্ট ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় জয়ী হন। এবং তখন তিনি ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ নামে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। সেই সময় তিনি দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন।

২০০৪ সালে, বেশ কিছু সমস্যার কারণে মুজাম্মিল এবং তার পরিবার কাশ্মীর ছেড়ে চলে যান। তারা স্থায়ীভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস শুরু করেন। এর পর মুজাম্মিল মডেলিংয়ে তার কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। সেই সময়েই দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে পরিচয়। মুজাম্মিলের দাবি, তখন থেকেই নাকি দুবছর ডেটিং করেন অভিনেত্রীর সঙ্গে।

মাত্র আট বছর বয়সে মুজাম্মিল সুইমিং পুলে ডুবে যাওয়া এক শিশুকে বাঁচিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এর ঠিক ১৯ বছর পর, তিনি গোয়ার সমুদ্রে ডুবে যাওয়া ৬০ বছর বয়সী এক নারীর জীবনও রক্ষা করেছিলেন। যার জন্য ২০০৯ সালে তাকে ‘গডফ্রে ফিলিপস জাতীয় সাহসিকতা পুরস্কার’ দেওয়া হয়েছিল। মুজাম্মিল দুবার জাতীয় স্তরের সাঁতার চ্যাম্পিয়ন। এ ছাড়াও, মডেলিংয়ের সময় তিনি অনেক ফ্যাশন শোয়ের জন্য পুরস্কার জিতেছিলেন।

২০০৭ সালে মুজাম্মিল পূজা ভাট পরিচালিত অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধোকা’ দিয়ে বলিউডে পা রাখেন। ছবিতে তিনি মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। প্রশংসিতও হয়েছিল তার অভিনয়। কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সফল হতে পারেনি। যদিও খুব বেশিদিন ইন্ডাস্ট্রিতে দেখা যায়নি তাকে। এর পর ২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’-এ তিনি অজয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ২০১২ সালে ‘উইল ইউ ম্যারি মি?’-তেও দেখা যায় তাকে। তবে মাঝে কিছু মিউজিক ভিডিওয় দেখা গিয়েছিল তাকে। লাকি আলির মিউজিক ভিডিও ‘কভি অ্যায়সা লগতা হ্যায়…’-তে দেখা গেছে মুজাম্মিলকে। এ ছাড়াও ‘তেরি ইয়াদ যব আতি হ্যায়’ ও ‘পরদেশিয়া’র মতো গানের ভিডিওতেও দেখা যায় মুজাম্মিলকে।

‘সিদ্ধার্থ কান্নানের পডকাস্ট’-এ মুজাম্মিল বলেন, ‘আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম এবং এখনও সেটা রয়েছে। খুব ভালো মেয়ে দীপিকা। ও যখন মডেলিং করছে, সেই সময় আমরা ডেটিং করতাম। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয়েও কাজ করেছি একসঙ্গে। আমরা দুবছর ডেটিং করেছি। মুম্বাইয়ে আমার সঙ্গেই তার প্রথম দেখা হয়। এর পর দীপিকা আমাকে প্রথম প্রেম প্রস্তাব দেয়। তবে কিছু কারণে আমি ওঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ফলে আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কিন্তু আমি কোনো কারণেই খুব একটা অনুশোচনা করি না। কাউকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমার কখনো অনুশোচনাও হয় না।’

দীপিকা এবং রণবীরের বিয়ের পর থেকেই নাকি তাদের মধ্যে যোগাযোগ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। মুজাম্মিল-এর কথায়, ‘দীপিকার বিয়ের আগে আমরা মাঝেমাঝে কথাও বলতাম এবং ও বরাবরের মতোই খুব মিষ্টি স্বভাবের একজন মেয়ে। ব্রেকআপের পর আর বন্ধুত্ব ছিল না ঠিকই। তবে একটা সময় আমরা একে অন্যের সাফল্যের ভীষণ প্রশংসা করতাম। আজও তাই।’
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস স্ক্রিন

Exit mobile version