নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখতে রাজি হয়েছে বিএনপি। সরকার নয়, সাংবিধানিক বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি) এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ হবে। স্পিকার, বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত সিলেকশন (বাছাই) কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন হবে। সংবিধান সংশোধন করে ১১৮(১ক) অনুচ্ছেদ যোগ করা হবে এই কমিটি গঠনে।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৮তম দিনের সংলাপে এই বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল। সাংবিধানিক কমিটি মাধ্যমে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি), ন্যায়পাল এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিয়োগ প্রস্তাবে এখনও রাজি নয় বিএনপি। দলটি আইনের মাধ্যমে নিয়োগ চায়। এতে সরকারের কাছেই থাকবে নিয়োগ। বিএনপি ইসি গঠনেও আইন চেয়েছিল। আজ দলটি অবস্থান বদল করে।
বুধবার আলোচ্যসূচিতে পিএস, সিএজি, ন্যায়পাল এবং দুদকের নিয়োগে কমিটি গঠনের প্রস্তাব থাকলেও, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ১৩টি রাজনৈতিক দলের বৈঠকের কারণে আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র কমাতে সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে নিয়োগের প্রস্তাব করেছিল ঐকমত্য কমিশন। এতে নির্বাহী বিভাগ তথা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমে যাবে যুক্তিতে বিএনপি ঘোর বিরোধিতা করে। এরপর কমিশন সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করলেও, তা বিএনপির আপত্তিতে টেকেনি।
মঙ্গলবার নতুন প্রস্তাব করে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন কমিশন। এতে বলা হয়েছে, ইসি, পিএসসি, সিএজি, এবং ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার, তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতিসহ ৭ সদস্যের কমিটি। আজকের সংলাপে বিএনপি ইসি গঠনের কমিটি থেকে তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করে। তা মেনে নিয়ে জামায়াত প্রস্তাব করে, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধিও রাখা যাবে। বিএনপি, এনসিপিসহ অন্যরা তা মেনে নেয়।