সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা বিলাসবহুল গাড়িগুলো নিলামের পরিবর্তে বিক্রি করার জন্য নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আবদুর রহমান খান বলেন, আমি জয়েন করার পর দেখেছি, ১৪ বছর ধরে বিপজ্জনক কিছু কার্গো বন্দরে পড়ে আছে, যা আমরা ইতোমধ্যে সরিয়ে ফেলেছি। এগুলো দেশের ডলার খরচ করে আমদানি হয়েছিল, কিন্তু ব্যবহার না হওয়ায় এখন ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক গাড়ি বন্দরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়েছে, যা রাইট টাইমে অকশন করলে নতুন করে গাড়ি আমদানি করতে হতো না।
তিনি বলেন, গাড়িগুলো নিলামে তোলা হলেও আশানুরূপ মূল্য পাওয়া যায়নি। এখন বিকল্প বিক্রয় ব্যবস্থার কথা ভাবছি। সরকারি কিছু সংস্থা ৬০ শতাংশ দামে এসব গাড়ি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে আমরা গাড়িগুলো জলের দরে বিক্রি করতে চাই না। একেকটি গাড়ির দাম ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। উপযুক্ত মূল্য না পেলে, সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর এনবিআর ওই সুবিধা বাতিল করে দিলে এসব গাড়ি রেখে যান সাবেক এমপিরা। চট্টগ্রাম কাস্টমস ২৪টি গাড়ি প্রথম দফায় নিলামে তুললেও সর্বোচ্চ প্রস্তাব ছিল ১ লাখ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। ফলে কাস্টমস সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা প্রায় ৬ হাজার কনটেইনার নিলামে তোলা হচ্ছে। প্রথম নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাকে পণ্য হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে সময় নষ্ট না হয় এবং বন্দরজট নিরসন করা যায়। এর আগে তিনি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আমদানি-রপ্তানির বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলমসহ নেতারা।
তিনি বলেন, আগামী ৬ আগস্ট বড় নিলাম হবে। জনগণকে নিলামে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে শহরে মাইকিংসহ অনলাইন ও পত্রিকায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কেউ ঘরে বসে অনলাইনে অংশ নিয়ে পে অর্ডার জমা দিতে পারবেন। শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ দামে একদফাতেই পণ্য বিক্রি হবে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এনবিআর চেয়ারম্যান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সময়োপযোগী উদ্যোগ ও স্বচ্ছ নিলাম ব্যবস্থার মাধ্যমে বন্দরের অকার্যকর সম্পদকে অর্থনৈতিক গতিশীলতায় রূপান্তর করা সম্ভব হবে।