বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘পুরোপুরি অসহায়’ না করা পর্যন্ত ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে ‘পূর্ণ শক্তির সাথে’ প্রতিশোধমূলক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ সামরিক জেনারেল। সোমবার (২৩ জুন) এক ভিডিও বিবৃতিতে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’-এর ২১তম পর্ব শুরু হওয়ার পরপরই বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আবদুর রহিম মুসাভি বলেছেন, অভিযানগুলো ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ অব্যাহত থাকবে।
মেজর জেনারেল মুসাভি বলেন, শত্রু যতই ক্ষতি করুক না কেন, ইসরাইলি সরকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধের জবাব দেয়া হবে। এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “নেতানিয়াহুকে হাঁটুকে গেড়ে না বসানো অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে অসহায় না করা পর্যন্ত ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে ‘পূর্ণ শক্তি দিয়ে’ ইরানের প্রতিশোধমূলক অভিযান নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত থাকবে।
এ সময় ইরানের শীর্ষ এই জেনারেল রবিবার ভোরের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন। সেই সঙ্গে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জড়িয়ে পড়াকে আমেরিকার ‘ব্যর্থ প্রক্সি’ ইহুদিবাদী সরকার, বিশেষ করে নেতানিয়াহুকে উদ্ধারের একটি মরিয়া প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
মেজর জেনারেল মুসাভি বলেন, পরাজয়ের ভারে নেতানিয়াহুর পতন প্রত্যক্ষ করার পর ট্রাম্প এই বেপরোয়া কাজের (পরমাণু স্থাপনায় হামলা) মাধ্যমে তাকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ট্রাম্পের সরাসরি নির্দেশে রবিবার সকালে মার্কিন বোমারু বিমান ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা- ইসফাহান, নাতাঞ্জ এবং ফরদো – লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
গত ১২ জুন দিবাগত রাত থেকে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জবাবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ট্রু প্রমিজ-৩ নামে প্রতিশোধমূলক পাল্টা অভিযান শুরু করে। ইরানি বাহিনীর হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন আগ্রাসনও শাস্তি ছাড়া পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা।
এর আগে রোববার (২২ জুন) ভোরে ইরানের পারমাণবিক বিভিন্ন স্থাপনায় মার্কিন হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে শীর্ষ এই জেনারেল বলেন, ধ্বংসের মাত্রা নির্বিশেষে এই অপরাধমূলক কাজের প্রতিক্রিয়া দেয়া হবে। ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অংশগ্রহণকে ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা, বিশেষ করে নেতানিয়াহুকে উদ্ধারের জন্য একটি মরিয়া প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন মুসাভি।