নেপালের কাঠমান্ডুতে দুর্নীতি এবং সরকারের বেশ কয়েকটি মিডিয়া অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে জেন-জির বিক্ষোভের সময় সহিংসতায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন ১২ বছরের কিশোরও রয়েছে। সোমবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ফেসবুক, এক্স (পূর্বে টুইটার) এবং ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের উপর নেপাল সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার পর, নতুন বানেশ্বরে ব্যারিকেড টপকে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন এবং এরপর বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেয়। বিক্ষোভের সময় লাল এবং নীল জাতীয় পতাকা উড়িয়ে স্লোগান দেন প্রতিবাদকারীরা। তারা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করো, সোশ্যাল মিডিয়া নয়, দুর্নীতি বন্ধ করো।’
সোমবারের প্রতিবাদ সমাবেশকে রিপোর্ট অনুসারে জেনারেল জেডের প্রতিবাদ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা সাধারণত ১৯৯৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন। ‘জেনারেশন জেড’-এর প্রতিবাদ হিসেবে উল্লেখ করা প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, সোমবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ এবং সাইট নিষিদ্ধ করার সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা যায় তাদের।
বিক্ষোভকারীরা কাঁটাতারের বেড়া এড়িয়ে নতুন বানেশ্বরে সংসদ ভবন ঘিরে ফেলার সময় দাঙ্গা পুলিশকে পিছু হটতে বাধ্য করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা গাছের ডাল এবং জলের বোতল ছুঁড়ে মারলে এবং সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়ার পর পুলিশ জলকামান, টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেয়। কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কয়েকজন বিক্ষোভকারী এমনকি সংসদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করে তোলে।
অস্থিরতার প্রতিক্রিয়ায়, কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস রাজধানীর বানেশ্বর এলাকায় প্রাথমিকভাবে আরোপিত কারফিউর মেয়াদ বাড়িয়েছে। নতুন বিধিনিষেধের মধ্যে এখন রাষ্ট্রপতির বাসভবন (শীতল নিবাস), লৈনচৌরে উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, মহারাজগঞ্জ, সিংহ দরবারের চারপাশ, বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সংলগ্ন এলাকাগুলোর মতো বেশ কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছাবিলাল রিজালের মতে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৩০ টা থেকে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে জনসাধারণের চলাচল, জমায়েত, বিক্ষোভ বা ঘেরাও কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিকে, সূত্র জানিয়েছে, বিক্ষোভের মধ্যে, সরকার এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে।