গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন ইমরান হোসেন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ২ জুলাই ঢাকার একটি হাসপাতালে আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা আটকে দিতে শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ।
ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাক্ষ্যে ইমরান জানান, তিনি সেদিন রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের একটি সরকারি হাসপাতালে ছিলেন। সেখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত কয়েকজনকে চিকিৎসা না দিয়ে পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত একজন চিকিৎসকের ফোনালাপে তিনি শেখ হাসিনার সেই নির্দেশ শুনতে পান বলে জানান।
ইমরান বলেন, আমি স্পষ্ট শুনেছি—ফোনে বলা হচ্ছিল, ‘ম্যাডাম বলছেন, চিকিৎসা দেওয়া যাবে না, ছাড়াও না’। এরপর থেকেই হাসপাতালের সব ইউনিটে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষী ইমরানের বক্তব্যকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, এটি প্রমাণ করে যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশেই মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
এদিন আদালতে আরও জানা যায়, তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ, কললিস্ট ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বক্তব্য সংগ্রহ করেছেন। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আগামী ১১ আগস্ট ধার্য করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ সাবেক সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গণহত্যা, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি ছিল দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য।