Site icon সারাবেলার খবর

পরমাণু অস্ত্রের নকশার পরীক্ষা চালিয়েছে ইরান, দাবি ইসরায়েলের

ইরানে সাম্প্রতিক হামলার আগে দেশটি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির নকশা পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন করেছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনীর আর্মি রেডিও সূত্রে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, এই তথ্যের ভিত্তিতেই ইসরায়েল প্রতিরোধমূলক হামলার সিদ্ধান্ত নেয়।

আর্মি রেডিও জানিয়েছে, নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, ইরানি বিজ্ঞানীরা পারমাণবিক বোমা তৈরির উদ্দেশ্যে একটি সফল প্রযুক্তিগত পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। এতে ধারণা করা হয়, ইরান চাইলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারত।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনী দাবি করেছে, এই গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরই ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতারা গত শুক্রবার ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও কর্মকর্তারা এও সতর্ক করে দেন যে, ইসরায়েল এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় যে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচিতে কোন পর্যায়ে অবস্থান করছে এবং বাস্তবে তারা ধারণার চেয়েও অনেক অগ্রসর থাকতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইরানি বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে গোপনে এমন এক প্রকল্পে কাজ শুরু করেন, যার মাধ্যমে পারমাণবিক উপাদানকে একটি কার্যকর বিস্ফোরক যন্ত্রে রূপান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এই কাজ হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর শুরু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পাশাপাশি এই কাজ চলছিল, যা শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং অস্ত্র তৈরির জন্যই উপযোগী। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সম্প্রতি জানায়, ইরান যদি তার ইউরেনিয়াম মজুত আরও সমৃদ্ধ করে, তাহলে তা দিয়ে অন্তত নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা ইরানের গোপন পারমাণবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয় এবং নিশ্চিত হয় যে, হামাসের হামলার পর ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগোচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ৯ ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানীর নাম প্রকাশ করেছে, যারা প্রাথমিক হামলায় নিহত হয়েছেন। এরা প্রত্যেকেই পারমাণবিক বিস্ফোরক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বহু বছরের অভিজ্ঞতা ছিল তাদের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পারমাণবিক প্রকৌশলী ফেরেদুন আব্বাসি, পদার্থবিদ মোহাম্মদ মেহেদি তেহরানচি, রাসায়নিক প্রকৌশলী আকবর মোতালেবি জাদেহ, পদার্থবিদ আমির ফাকাখি, ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ার সাঈদ বার্জি, এবং আরও অনেকে।

আইডিএফ বলেছে, নিহতরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য ‘জ্ঞানের মূল ভাণ্ডার’ ছিলেন এবং তাদের অনেকে মোহসেন ফাখরিজাদেহের উত্তরসূরি ছিলেন, যাকে ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের ‘স্থপতি’ বলে বিবেচনা করা হয় এবং যিনি ২০২০ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, যার জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করা হয়। ইসরায়েলের দাবি, তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না। ইরান এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যেখান থেকে তারা যে কোনো সময় পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারত।

Exit mobile version