১৭ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ৫ মে ২০২৫, ১১:১৫ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

পাঁচ দফা দাবিতে দেশজুড়ে নিম্ন আদালতের কর্মচারীদের কর্মবিরতি

প্রকাশ : ৫ মে ২০২৫, ১১:১৫ পিএম

👁 18 views

সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয়, জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদান, স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মবিরতি পালন করেছেন আদালতের কর্মচারীরা। বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন এর উদ্যোগে সোমবার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১ পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়।

বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন যশোর শাখার উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ কর্মবিরতি পালন করেন কর্মচারীরা। সংগঠনের সভাপতি মোনায়েম কবীর ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহআলমের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে জেলা জজ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দুই শতাধিক কর্মচারী অংশ গ্রহণ করেন। এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, এ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য দাবি জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। যে কারণে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।

ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। এ সময় বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাফ উদ দৌলা মাসুম, জেলা সভাপতি আমাদ উদ্দীন, নাজির সাইফুল ইসলাম নান্নু ও সিজেএম আদালতের নাজির হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাফ উদ দৌলা মাসুম জানান, তাদের দাবি পূরণে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রেজিস্টার জেনারেলের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়া জেলা জজের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দাবি বাস্তবায়নে আশ্বাস প্রদান করা হলেও অদ্যাবধি দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।

মাদারীপুর:
বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন-এর মাদারীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে এতে অংশ নেয় মাদারীপুরের বিভিন্ন আদালতের কর্মচারীরা। পরে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।

এ সময় বক্তারা দাবি জানান, অধস্তন বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে গণ্য করার পাশাপাশি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদান, বিদ্যমান ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যোগ্যতা ও জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে পদায়ন, বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আলাদা আদালত করার পাশাপাশি নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে। তা না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন-এর মাদারীপুর জেলা শাখার নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন-এর মাদারীপুর জেলা শাখার সহসভাপতি মো. আল মামুন, রত্না রানী কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরাফাত উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খানসহ অনেকে।

নেত্রকোনা:
সকল কর্মচারী জেলা জজ আদালতের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন। তাদের সাথে বার কাউন্সিলের বেশ কয়েকজন আইনজীবী একাত্মতা পোষণ করেন।

বাংলাদেশ বিচারবিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন নেত্রকোনা জেলা শাখার ব্যানারে এই কর্মবিরতি পালন করে। এসময় দাবিগুলো উত্থাপন করে বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা।

তাদের সাথে একমত পোষণ করে জিপি এডভোকেট মাহফুজুল হক বলেন, তাদের যৌক্তিক দাবির সাথে তারাও সহমত জানিয়েছেন। অবিলম্বে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে বিচার বিভাগের আওতায় আনা হোক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
কর্মসূচিতে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ জানান, অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীগণকে বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে।

বিদ্যমান জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের ১ম-৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম-১২তম গ্রেডভুক্ত করতে বিদ্যমান ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজনপূর্বক যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

তারা আরও বলেন, অনেক কর্মচারী আক্ষেপ ও হতাশা নিয়ে একই পদে ৩৮ থেকে ৪০ বছর চাকরি করে পদোন্নতিবঞ্চিত থেকে অবসরে যাচ্ছেন।

বান্দরবান:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দুই দফা দাবীতে কর্মবিরতি পালন করেছে বান্দরবানে বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা। সকালে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। এসময় বান্দরবান বিচার বিভাগের সকল কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে অংশ নেয়।

গোপালগঞ্জ:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কর্মবিরতি দিয়ে জেলা জজ আদালতের প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় জেলা জজ আদালত ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সকল স্তরের কর্মচারীরা। পরে আদালতের সামনের সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে তারা।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো: হান্নান মোল্যা, সাধারণ সম্পাদ মো: মনিরুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার আবু সাঈদ।

সংগঠনের সভাপতি গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হান্নান মোল্লা বলেন, আমরা চাকরির শুরু থেকেই জুডিসিয়ারি কাজ করে আসছি। অথচ আমাদের নিয়োগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আমাদের দাবি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে বিচার বিভাগের অধীনে আমাদের নিয়োগ দেয়া হোক। তাছাড়া আমরা চাকরি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই পদে চাকরি করে যাচ্ছি, কেন এই বৈষম্য। যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া হোক।

বাগেরহাট:
সকালে বাগেরহাট আদালতে চত্বরে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির পালন করেন বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা। কর্মবিরতি চলাকালে বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হন।

বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অমিত রায়, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাসানসহ আরও অনেকে উপস্থিতি ছিলেন কর্মসূচিতে।

রাঙ্গামাটি:
সকাল ১০টা থেকে সাড়ে এগারটা পর্যন্ত রাঙ্গামাটি আদালত চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন রাঙ্গামাটি শাখার সভাপতি মো. জয়নাল আবেদিন, সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম ও মো. শফিউল ইসলাম।

এসময় বক্তারা বলেন, আমরা কাজ করছি বিচার বিভাগের সাথে, আমাদের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় হবার কথা- আইন আইন মন্ত্রনালয়, অথচ আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। ফলে আমরা অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থায় আছি। দ্বৈত অভিভাবকের কারণে আমাদের বিষয়ে কেউ ভাবে না। তাছাড়া আমরা জুডিশিয়াল ভাতা ভাতা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি।

মেহেরপুর:
মেহেরপুর জেলা আদালত চত্বরে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। কর্মবিরতিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি ও মেহেরপুর চিপ জুডিশিয়াল ইসটোনো গ্রাফার শেখ মোহাম্মদ আহসানুল হক, সাধারণ সম্পাদক ও চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রধান তুলনা কারক মাসুদ রানা, সদস্য জাকির হোসেন, চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রধান তুলনা কারক সফিকুল ইসলাম, অফিস সহায়ক বেদেনা বাবলীসহ আদালতের কর্মচারীবৃন্দ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x