ভারতের ওড়িশা উপকূল থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরে আঘাত হানার মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। বুধবার ওড়িশার চান্দিপুরের ইন্টেগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (আইটিআর) থেকে ‘অগ্নি-৫’ নামে মাঝারি পাল্লার মিসাইলটি সফলভাবে পরীক্ষা করে নয়াদিল্লি। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আজ ওড়িশার চান্দিপুরে অবস্থিত ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘অগ্নি ৫’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এই সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মিসাইলটির সব কার্যক্ষম ও প্রযুক্তিগত মানদণ্ড সম্পূর্ণরূপে যাচাই করা গেছে।
মিসাইলটি তৈরি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইলটি ৫ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে উৎপাদনকারীরা।
এটি ভারতের ‘অগ্নি’ মিসাইল সিরিজের মধ্যে সর্বাধুনিক। এটি ১ দশমিক ৫ টনের পারমাণবিক বোমাসহ ছোড়া যাবে। মিসাইলটি তৈরি করা হয়েছে হালকা পদার্থ দিয়ে। যা এটির নির্ভরযোগ্যতা বাড়িয়েছে।
অগ্নি ৫ মিসাইলটি মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকল (এমআইআরভি) প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। এই প্রযুক্তির ফলে একটি মাত্র মিসাইল বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে একাধিক ওয়ারহেড বহন করে আঘাত হানতে সক্ষম হয়, যা এর কৌশলগত কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।
নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করার জন্য এই মিসাইলটিতে রিং লেজার জাইরোস্কোপ-ভিত্তিক ইনার্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (আরএলজি-আইএনএস) এবং একটি মাইক্রো-ইনার্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (এমআইএনজিএস) ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতের নিজস্ব স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম ন্যাভিক এবং আমেরিকার জিপিএস এই দুটি সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করেছে।
মিসাইলটিকে একটি তিন ধাপের কঠিন জ্বালানি চালিত প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি একটি ক্যানিস্টারাইজড প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর ফলে মিসাইলটি খুব দ্রুত মোতায়েন করা যায়, সহজে সংরক্ষণ করা যায় এবং এর গতিশীলতাও অনেক বেশি থাকে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ফ্লোরিডার ট্যাম্পায় পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ভারতের সাথে ‘ভবিষ্যতের যুদ্ধে’ তার দেশ যদি অস্তিত্বের হুমকির সম্মুখীন হয় তবে পারমাণবিক হামলার হুমকি দেন।
এরপর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা একই ধরনের কথা বলেন। পরবর্তীতে এসব মন্তব্যের কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত। অনেক বিশ্লেষকের মতে, পাকিস্তানের হুমকির জবাব এবং নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণের জন্যই অগ্নি ৫-এর পরীক্ষা চালিয়ে থাকতে পারে ভারত।