পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বন ও প্রাকৃতিক সম্পদ কেবল পরিবেশ নয়, দেশের অর্থনীতি, জীববৈচিত্র্য ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সব অংশীজনের সম্মিলিত অংশগ্রহণ অপরিহার্য। শনিবার বন অধিদপ্তরে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বনকে শুধু কার্বন ট্রেডিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে এটি যেন প্রাকৃতিক অক্সিজেন সরবরাহকারী ও জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উন্নত দেশগুলো যদি কেবল কার্বন ক্রেডিট কিনেই দায়িত্ব শেষ মনে করে, তবে তারা প্রকৃতপক্ষে নির্গমন হ্রাসে আগ্রহী নয়।
তিনি বলেন, ডিগ্রেডেড বন পুনরুদ্ধার, স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি-ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা এবং বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সুফল প্রকল্পগুলোর নিরপেক্ষ যাচাই জরুরি।
তিনি বলেন, জাতীয় বন জরিপের দ্বিতীয় চক্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যভান্ডার নীতিনির্ধারণ, বন সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। ভূপ্রকৃতি, ভূমি ব্যবহার ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ভিত্তি করে সমন্বিত মানচিত্র ও ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা টেকসই উন্নয়নে সহায়ক হবে।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, এই ইনভেন্টরি কাজ একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে তা সফল করতে হলে নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের বিশ্লেষণ, প্রযুক্তিনির্ভর মনিটরিং এবং পাঁচ বছর পরপর তথ্য হালনাগাদ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। শুধু বিদেশি সহায়তার অপেক্ষায় না থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই অর্থায়নের বিকল্প ভাবতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী। এতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, এফএও প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং সিইজিআইএস-এর নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান বক্তব্য রাখেন। এছাড়া কর্মশালায় বন অধিদপ্তর, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।