বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের ‘৫ আগস্ট’ নিয়ে দেওয়া বক্তব্য জুলাই-আগস্টে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানির শামিল। অবিলম্বে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চব্বিশের ৫ আগস্ট নিয়ে ফজলুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ফজলুর রহমানের সব সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করে তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেবে গণঅভ্যুত্থানের বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ শক্তি ‘জুলাই ঐক্য’।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ‘৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ ঘটিয়েছে কালো শক্তি, যারা ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, তাদের আমি নেতা বলতে চাই না, তারা কেবল অভিনেতা। মানুষ এখন বুঝে গেছে, এরা রাজাকারের বংশধর’ এমন বক্তব্য দেন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা ফজলুর রহমান। জুলাই ঐক্য মনে করে তার এই বক্তব্য সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটে আঘাত করেছে।
ফজলুর রহমানের এই বক্তব্য শুধু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনকে বিতর্কিত নয়, বিএনপির দীর্ঘদিনের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। জুলাই বিপ্লব নিয়ে ফজলুর রহমানের ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। আমরা জানতে পেরেছি, এই ঘটনায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। বাংলাদেশে শোকজের রাজনীতি যুগ যুগ ধরে চলছে। এ ঘটনা যেন শুধু শোকজে থেমে না থাকে। তার জন্য বিএনপিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় ফজলুর রহমান বাধাহীনভাবে কাটিয়েছিলেন। যখন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পরিবার ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন, তখনও ফজলুর রহমানরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো।
রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, সে কথা বলার স্বাধীনতা মানে মুজিববাদের পুনরুত্থান নয়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর এখনো যারা ফ্যাসিবাদের চর্চা করছেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের দুঃস্বপ্ন দেখেছেন, একই সঙ্গে ভারতের ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করছেন সব দল এবং ব্যক্তিকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। জুলাই শেষ হয়নি। প্রয়োজনে আমরা চূড়ান্ত বিপ্লবের পথ বেছে নেব। তখন কোনো আদর্শই জুলাই শক্তির সামনে টিকে থাকতে পারবে না।